অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা

|

অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সকল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মো. আতাউর রহমান এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সকল কলেজ ও প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ থাকবে।

এর আগে, মঙ্গলবার অনির্দিষ্টকালের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটসমূহের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আরও পড়ুন:- অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল-কলেজ-পলিটেকনিক বন্ধ ঘোষণা

এদিকে, সকল শিক্ষা বোর্ডের আগামী বৃহস্পতিবারের (১৮ জুলাই) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে আন্ত শিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার এ তথ্য জানান।

আরও পড়ুন:- বৃহস্পতিবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত

আজ মঙ্গলবার দিনভর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়েছে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে শিক্ষার্থীসহ ৬ জন নিহত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত রোববার কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আন্দোলন পরিস্থিতি। চীন সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কোটা পাবে না, তো কি রাজাকারের নাতিরা পাবে? বিচিত্র আমাদের দেশ, বিচিত্র আমাদের মানসিকতা বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে এদিন রাতেই প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিবাদ ও প্রত্যাহারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।

পরদিন সোমবার কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের শতাধিক আহত হন। এদিন রাতেই তারা ঘোষণা দেয়, আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার। ছাত্রলীগও দুপুরে পাল্টা প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়।

তবে, আজ দুই পক্ষের কর্মসূচি ছাপিয়ে সারাদেশে সংঘর্ষের ঘটনা-ই আলোচনায় আসে। এখন পর্যন্ত অন্তত ৬ জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঢাকায় ২, চট্টগ্রামে ৩ ও রংপুরে ১ জন নিহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বহালে গত ৫ জুনে রায় দেন হাইকোর্ট। তবে, কোটাব্যবস্থা বাতিলে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত ৭ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। পরে গত ১৪ জুলাই রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপিও দেন তারা।

গত ১০ জুলাই হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতিবস্থাও দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও সরকার পক্ষ থেকে আজ লিভ টু আপিল করা হয়েছে।

কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি হলো:

সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে সকল প্রকার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।

/আরএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply