ফের নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করলেন সিমোন বাইলস

|

ছবি: সংগৃহীত

চলতি অলিম্পিকে দ্বিতীয়বার স্বর্ণপদক জয় করলেন সিমোন বাইলস। ২৭ বছর বয়সী এই জিমন্যাস্ট আবারও প্রমাণ করলেন নিজের শ্রেষ্ঠত্ব। অলিম্পিকে এটি নবম পদক বাইলসের। জিমন্যাস্টিক্সে রিও অলিম্পিকে জেতেন চারটি সোনা ও একটি ব্রোঞ্জ। টোকিও অলিম্পিকে স্বর্ণ জিততে ব্যর্থ হলেও ৮ বছর পর এসে আবার ফিরে পেলেন নিজেকে।

‘ব্যাক এগেন টু টেক মাই প্লেস। হিয়ার টু স্টে। ডোন্ট কাউন্ট মি আউট। জাস্ট বিলিভ দিস ইজ মাই ডেস্টিনি।’ সত্যিই তো নিয়তি। নইলে যিনি ভেবেছিলেন তার ক্যারিয়ার শেষ, সেই তিনিই আবার ফিরলেন রানীর বেশে! যে অলিম্পিকের মঞ্চে জুটেছিল অপমান, সেই অলিম্পিকের মঞ্চই আবার তাকে স্বাগত জানালো আবার! নিয়তির সঙ্গে রয়েছে অদম্য জেদ, পরিশ্রম। নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা।

এই মুহূর্তে সেরা জিমন্যাস্টের নাম সিমোন বাইলস। অলিম্পিকে যার ৯টি পদক রয়েছে। যিনি পাঁচ বার বিশ্ব জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতায় নেমে ছ’বারই অলরাউন্ড সোনা জিতেছেন। জিমন্যাস্টিক্সে কৃষ্ণাঙ্গ মেয়েদের মুখ হয়ে উঠেছেন। সব সমালোচনার জবাব দিয়েছেন খেলার মাধ্যমে। এ বারের প্যারিস অলিম্পিকেও মধ্যমণি তিনি। আট বছর পরে আবার অলিম্পিকে নিজের ঝলক দেখালেন তিনি।

বাইলস আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিক্সে মেয়েদের অলরাউন্ড ইভেন্টে শুরু করেছিলেন ভল্ট দিয়ে। মেয়েদের ব্যক্তিগত এই ইভেন্টে আছে চারটি রাউন্ড, ভল্ট, আনইভেন বারস, ব্যালান্স বিম এবং ফ্লোর এক্সারসাইজ। ভল্টে তিনি মোট ১৫.৭৬৬ স্কোর করেন। আনইভেনে বারসে বাইলস স্কোর করেন ১৩.৭৩৩। ব্যালান্স বিমে ১৪.৪৬৬ স্কোর করেন বাইলস। তিনটি রাউন্ড শেষে শীর্ষে ছিলেন তিনি। ফ্লোর এক্সারসাইজের পর স্বর্ণপদক নিশ্চিত করেন বাইলস।

ফ্লোর এক্সারসাইজে ১৫.০৬৬ স্কোর করেন বাইলস। যা সবচেয়ে বেশি। দ্বিতীয় স্থানে শেষ করেন ব্রাজিলের রেবেকা আনদ্রাদে। তাঁর থেকে বাইলস এগিয়ে ১.১৯৯ স্কোরে।

২০১৬ সাল। ব্রাজিলের রিয়ো ডি জেনেইরো। অলিম্পিক্সে প্রথম বার দেখা যায় বাইলসকে। আমেরিকার মহিলা জিমন্যাস্টিক্সের দলে সর্বকনিষ্ঠ সদস্য তিনি। বয়স ছিলো ১৯। সেই সময়ই সেরার সেরা হওয়ার ঝলক দেখিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। রিও অলিম্পিকে জেতেন চারটি সোনা ও একটি ব্রোঞ্জ জেতেন বাইলস।

রিও অলিম্পিকের শেষে জিমন্যাস্টিক্সের দুনিয়ায় সবচেয়ে চর্চিত নাম হয়ে উঠলেন বাইলস। তিনি পদক জিতবেন কি না, সেই প্রশ্ন ছিল না। প্রশ্ন ছিল, তিনি কতগুলি পদক জিতবেন। দেখে মনে হচ্ছিল, টোকিও অলিম্পিক নিজের করে নিবেন বাইলস। কিন্তু টুইস্টিস সমস্যায় ভুগে টোকিও অলিম্পিকের মাঝপথে নিজেকে সরিয়ে নেন বাইলস। প্রত্যাশার চাপের পাশাপাশি বাইলসকে ধাক্কা দেয় কোভিড।

বাইলস শুধু এক জন জিমন্যাস্ট নন, তিনি আমেরিকার জিমন্যাস্টিক্সের পালাবদলের অন্যতম কান্ডারি। বাইলস লড়াই করেছেন আমেরিকার জিমন্যাস্টিক্সে বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধেও। বিচারকেরাও গায়ের রং দেখে নম্বরের হেরফের করতেন। সেই মানসিকতা বদলে দিয়েছেন বাইলস। বুঝিয়ে দিয়েছেন, ম্যাটে নামার পরে খেলাটাই আসল। এখন আমেরিকায় মহিলাদের জিমন্যাস্টিক্সে কৃষ্ণাঙ্গ মেয়েরা উঠে আসছে। বাইলসকে দেখে স্বপ্ন দেখছেন তারাও।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply