অনিশ্চয়তায় ব্যাংক থেকে অনেকে টাকা তুলে নিয়েছেন

|

রিমন রহমান:

ব্যাংকের বাইরে চলে গেছে বড় অঙ্কের টাকা। সংঘাত ও অনিশ্চয়তায় নিজের কাছেই টাকা রেখে দিয়েছেন বিপুল সংখ্যক গ্রাহক। অভিযোগ আছে, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ ব্যাংক থেকে নিরাপদ স্থানে রেখেছেন কেউ কেউ। অনেকেই আবার বিপদের আশঙ্কায় নিজের কাছেই সংরক্ষণ করেছেন অর্থ।

যেমন, গত ১৬ আগস্ট মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে এক সচিবের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ৩ কোটি টাকা। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘরেই সংরক্ষণ করেছিলেন এই সাবেক সচিব।

হিসাব বলছে, গেল জুন শেষে ব্যাংক ব্যবস্থার বাইরে চলে যায় ৩ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা। ছয় মাসের ব্যবধানে ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ বেড়েছে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। গেল জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে অস্থিরতা শুরু হলে ব্যাংক থেকে টাকা তোলার পরিমাণ বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

ব্যাংক থেকে তুলে নেয়া অর্থ আবার ফিরিয়ে আনাই বড় চ্যালেঞ্জ হবে, এমনটা বলছেন বিশ্লেষকরা। এরই মধ্যে তিন দফায় টাকা উত্তোলনের সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছ বাংলাদেশ ব্যাংক।

এই প্রসঙ্গে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, মানুষের ব্যয় বেড়ে গেছে। ব্যাংকগুলোতেও সমস্যা, সবমিলিয়ে কিছুটা অনিশ্চিয়তা… মানুষ ভাবছে আজ ব্যাংকে টাকা রেখে দিলে কাল যদি সমস্যা হয়। তাই এমনটা হয়েছে।

অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ অনেকেই সরিয়ে ফেলেছেন। টাকা তুলে বিদেশি মুদ্রায় রূপান্তর করে পাচারও করেছে কেউ কেউ।

সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, অনেক সময় কালো টাকাগুলো ঘরে থেকে যাচ্ছে। ব্যাংকে ওভাবে আসে না। তখন তারা বিদেশি মুদ্রা কিনে রাখে।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যাংক থেকে টাকা তোলায় নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে। এখন দিনে সর্বোচ্চ তোলা যাবে তিন লাখ টাকা। বলা হচ্ছে ব্যাংকের বাইরে থাকা অর্থের গন্তব্য খুঁজে বের করা দরকার।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক ড. মঞ্জুর হোসেন বলেন, যারা অন্যায়-অবিচার ও দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিল, তারা হয়তো পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, সেক্ষেত্রে একটা গ্রুপ ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেছে, এগুলো বড় অঙ্কের টাকা। এগুলো দুর্নীতিবাজদের টাকা। তারা বাসা বা কোথাও লুকিয়ে রাখছে। সময় বুঝে তারা পালিয়ে যেতে পারে। হুন্ডির মাধ্যমে সেটা পাচারও করতে পারে।

এদিকে, বাংলাদেশে ব্যাংকের গভর্নর নিশ্চিত করেছেন, ১ হাজার টাকার ব্যাংক নোট নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটছেন না তারা। তবে কালো টাকার বিরুদ্ধে শুরু হতে পারে অভিযান।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply