ভারতকে বিদায় করে ফাইনালে বাংলাদেশ

|

ছবি: সংগৃহীত

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে কখনও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বাংলাদেশ। সেই ইতিহাস গড়ার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে সেমিফাইনালে শক্তিশালী ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সেমির মহারণে নির্ধারিত সময়ে খেলা ১-১ সমতায় থাকার পর আসিফ বীরত্বে টাইব্রেকারে ভারতকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে লাল-সবুজদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল।

সোমবার (২৬ আগস্ট) নেপালের  ললিতপুরের আনফা কমপ্লেক্সে ম্যাচের শুরু থেকে দুই দল আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ করতে থাকে। ভারত তুলনামূলক বেশি আক্রমণ করলেও ফিনিশিং দক্ষতার অভাবে গোল পায়নি। অন্যদিকে বাংলাদেশ একটি দুর্দান্ত সংঘবদ্ধ আক্রমণে লিড নেয়। ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে বাম প্রান্ত থেকে আসা ক্রস ভারতীয় গোলরক্ষক পুরোপুরি সেভ করতে পারেননি। পোস্টের সামনে থাকা আসাদুল মোল্লা ঠান্ডা মাথায় প্লেসিং করে বল জালে পাঠান।

প্রথমার্ধে বাকি সময়ে লিড বাড়ানোর চেষ্টা করে বাংলাদেশ। ভারতও সমতা আনার সুযোগ তৈরি করেছিল। তবে ৪৫ মিনিট শেষে অতিরিক্ত ৫ মিনিটেও ম্যাচের স্কোরলাইন পরিবর্তন হয়নি। ১-০ গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় মারুফুল হকের শিষ্যরা।

দ্বিতীয়ার্ধে বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে খেলার চেষ্টা করতে থাকে বাংলাদেশ। ৫০তম মিনিটে কয়েক সতীর্থের পা ঘুরে বল পান পিয়াস আহমেদ নোভা। এই ফরোয়ার্ডের শট ফেরান ভারত গোলরক্ষক। এরপরই একের পর এক আক্রমণে বাংলাদেশের রক্ষণ কাঁপিয়ে দেয় ভারত। মাংলেনথাং কিপজেনের বাঁ পায়ের শট পোষ্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যাওয়ার পর ৫৪তম মিনিটে ভারতের হতাশা আরও বাড়ে। সতীর্থের লম্বা পাস ধরে শ্রাবণকে একা পেয়ে গিয়েছিলেন করু সিং থিংগুজাম, কিন্তু তার দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদের চেষ্টা বেরিয়ে যায় বাইরে দিয়ে।

ম্যাচের ৬৫ মিনিটে গোললাইন ক্লিয়ারেন্স করে বাংলাদেশকে গোল হজম থেকে বাঁচান ডিফেন্ডার কামাচায় মারমা আকাই। আগুয়ান গোলরক্ষক মেহেদী হাসানের মাথার ওপর চিপ করেন ভারতের গগমসার গয়ারি, বল পোস্টের দিকেই যাচ্ছিল কিন্তু দৌড়ে গিয়ে ক্লিয়ার করেন আকাই। এর পরই মাঠ ছেড়ে যেতে হয় বাংলাদেশ অধিনায়ককে। গগমসার গয়ারি বুটের আঘাতে ব্যথা পান মেহেদী হাসান। তার পরিবর্তে মাঠে নামেন গোলরক্ষক মোহাম্মদ আসিফ।

অধিনায়ককে হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ। তাতে খেলায় ফেরে ভারত। বক্সের ভেতর থেকে নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন রিকি মিতে হোবাম। এরপর দুই দলই গোলের খোঁজে থাকলেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের দেখা পায়নি। বরং যোগ করা সময়ে কামাচায় মারমা লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। এরপরই ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজান রেফারি। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুসারে অতিরিক্ত সময় ছিল না সেমিফাইনাল ম্যাচে। খেলার ভাগ্য গড়ায় সরাসরি টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকারের শুরুতেই আলো ছড়ান আসিফ; থাংলাংসুন গাঙ্গতের প্রথম শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে আটকে দেন। এরপর চার শটে বাংলাদেশের পিয়াস আহমেদ নোভা, মইনুল ইসলাম মইন, শাকিল আহাদ তপু ও আশরাফুল হক আসিফ লক্ষ্যভেদ করেন। ভারতের তিনজন জালের দেখা পাওয়ার পর আকাশ তিরকে আসেন পঞ্চম ও শেষ শট নিতে। আসিফ তা ফেরানোর সাথে সাথেই বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশ।

আগামী বুধবার শিরোপা লড়াইয়ে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের দেখায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-০ গোলে জয়ের পর নেপালের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরেছিল মারুফুল হকের দল। সেই হারের প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগও এখন নোভা-আসিফদের সামনে।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply