তৌহিদ হোসেন:
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার যাত্রায় চ্যালেঞ্জ পাহাড়সম। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা থেকে তুলে ধরা হচ্ছে বঞ্চনার অভিযোগ। পোশাক শ্রমিকরাও মজুরি আর সুযোগ-সুবিধার দাবি নিয়ে নেমেছেন রাস্তায়। কোনো কোনো মহল থেকে উসকানিরও অভিযোগ ওঠেছে। অস্থিরতা দেখা গেছে ওষুধ শিল্পেও।
এক মাস আগে দায়িত্ব নেয়া শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলছেন, শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতে গুরুত্ব দিতে চায় সরকার। শ্রমিকদের কল্যাণ ছাড়া তৈরি হবে না বৈষম্যহীন সমাজ।
তার অভিযোগ, শেখ হাসিনা সরকার শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি অগ্রাহ্য করেছে। বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরিতে মনোযোগ দেয়নি। অপরদিকে উদ্যোক্তারা বলছেন, যেকোনো সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে থাকবেন তারা। তবে উপলব্ধি করতে হবে বাস্তবতা।
আসিফ মাহমুদ বললেন, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনকে দমন করা হয়েছে, গতবছরও ৪ জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আর শ্রমিকদের বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলক মামলা দেয়া হয়েছে। ২০২৩ সালে মজুরির দাবি তোলা শ্রমিকদের বিরুদ্ধে করা নিপীড়নমূলক মামলা তুলে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আমি মনে করি, শ্রমিকদের নায্য অংশ তাদেরকে বুঝিয়ে দেয়াটাই আমার অন্যতম কাজ হবে।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে দেশে বেড়েছে বেকারত্ব। কাজ না থাকায় শ্রমবাজার থেকে ছিটকে গেছে প্রায় সাড়ে ৯ লাখ মানুষ।
এ নিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমি কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এসে দেখেছি, কারও এদিকে নজর নাই। এটি খুবই অবহেলিত জায়গা। কিন্তু বাংলাদেশে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজের জায়গা হওয়া উচিত এটি। কারণ, আমাদের বেকারত্বের হার অন্য উন্নয়নশীল দেশের থেকে অনেক বেশি।
কর্মসংস্থান তৈরিতে পাশে থাকার কথা বলছেন শিল্প মালিকরা। তবে তাদের চিন্তা ব্যবসার সার্বিক পরিবেশ নিয়ে।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বললেন, বন্দর থেকে পণ্য ছাড়াতে গেলে অনেক সময় লাগে। অনেক খরচও লাগে। সেগুলো একটা বাস্তবতা। এছাড়া টিকে থাকতে হচ্ছে, ব্যাংকের সুদ রয়েছে। দুইটি পক্ষেরই সহনশীল অবস্থায় আসা উচিত। মালিকদেরও সংবেদনশীল হওয়া উচিত।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিকভাবেও নতুন নতুন ইস্যু এসেছে। এগুলোর পরিবর্তন হয়েছে। কমপ্লায়েন্স ইস্যু এসেছে কারখানাগুলোতে, আমাদের সেই কমপ্লায়েন্স কমপ্লাই করে কারখানা করতে হয়। ২০ বছর আগেও এখানে হয়তো কমপ্লায়েন্স করতে হয়নি। সবকিছু মিলিয়ে পরিবর্তিত অবস্থায় এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে শ্রমিকদের কর্মক্ষম রাখতে যা দরকার বিজিএমইএ ও শিল্প মালিকরা তা করবে।
এরই মধ্যে বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেয়ার আভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তার আগে শ্রম অধিকার নিয়ে বেশ কিছু বিষয়ের মিমাংসা চায় দেশটি।
/এমএন
Leave a reply