আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের ভুলত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের রাজনীতি বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের রাজনীতি। আমরা মানুষের মধ্যে আছি। তাই ক্ষমতায় না থাকলেও পালিয়ে যাব না।
শুক্রবার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এ দেশেই জন্ম, এ দেশেই আমরা মরব। যে শপথ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ষড়যন্ত্র মামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এ সময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখন কোথায় নিয়ে যাচ্ছে কেউ জানত না। বঙ্গবন্ধু জেলখানা থেকে বাহিরে পা দিয়ে কুয়াশা ভেজা সকালে একখণ্ড মাটি কপালে ছুঁয়ে বলেছিলেন-এই দেশেতেই জন্ম, আমরা যেন এই দেশেতেই মরি ।
তিনি আরও বলেন, আমরাও এই মাটির সঙ্গেই আছি। বঙ্গবন্ধুও ছিলেন, তার কন্যা শেখ হাসিনাও আছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমতা আল্লাহর হাতে, জনগণের হাতে। ক্ষমতার দাপট আমরা কোনো দিন দেখাইনি। আমাদের ভুলত্রুটি হতে পারে, এত বড় দল। কিন্তু আমরা অপকর্মকারীকে আনপানিশড যেতে দিইনি।
এ সময় তিনি নিজ দলের সংসদ সদস্যের কারাগারে থাকার বিষয়টি টেনে বলেন, আমরা ভুল হলে সংশোধন করে নিই। ভুল হলে সংশোধনের সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার মনোনয়নপর্ব শেষে দেয়া হবে বলে জানান দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, মনোনয়নপর্ব শেষে ইশতেহারের বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নেব।
‘সম্ভবত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্র কিংবা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ইশতেহার প্রকাশ হতে পারে।’
নির্বাচনী ইশতেহারে ‘দিনবদলের অভিযান, অদম্য বাংলাদেশ’ গ্রামীন উন্নয়নগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে বলে জানান কাদের।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন এখন চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এবার দলের মনোনয়নের ক্ষেত্রে রাজনীতিকদেরই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। গতবারের চেয়ে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে।
‘সাবেক ছাত্রনেতা যারা তৃণমূল থেকে এসেছেন, তাদের আমরা মনোনয়ন দিয়েছি। সর্বমোট আসন সংখ্যার মধ্যে ১৬-১৭ জন ব্যবসায়ী মনোনয়ন পেয়েছেন।’
তিনি বলেন, এ ছাড়া ৪০ জনের কাছাকাছি মুক্তিযোদ্ধা, আর নতুন মুখ ৫০-এর কোটা ছুঁতে পারে বলে আমার কাছে মনে হচ্ছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনের আগে নিশ্চিত করে বলা যাবে না-কে বিদ্রোহী প্রার্থী। তবে কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী হলে তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে বলেও জানান তিনি।
আসন ভাগাভাগি নিয়ে মহাজোটে ক্ষোভ রয়েছে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু ক্ষোভ তো থাকতেই পারে। এত বড় জোট-এখানে তো ক্ষোভ-বিক্ষোভ কিছু হবেই। সেই ক্ষোভ প্রশমিতও আমরা করব।
‘কিন্তু প্রত্যাহার পর্যন্ত যাদের ধৈর্য থাকবে না, তাদের জন্য ব্যবস্থা আছে।’
মুজিব কোট পরা ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা তো আওয়ামী লীগেই ছিলেন। তাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ থাকবে। তারা তো শুনে বিষ পান করেছেন। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন এটি তাদের দীর্ঘদিন তাড়িত করবে।
এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
Leave a reply