দ্রুত বাছাই কমিটি গঠন করে অবিলম্বে তথ্য কমিশনে প্রধান তথ্য কমিশনার ও অন্যান্য তথ্য কমিশনারের নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। আজ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এমন দাবি করেছে তথ্য অধিকার ফোরাম।
ফোরামের আহ্বায়ক শাহীন আনাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়– তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ বাংলাদেশের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ আইন, যা দেশের সকল নাগরিককে দেশের সরকারের কাছে সংরক্ষিত যাবতীয় তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিত করে। আইনটির মাধ্যমে জনগণ দেশের সব রকমের সরকারি ও বেশকিছু আধা-সরকারি সংস্থার কাছে থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে সেসব প্রতিষ্ঠানের কাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পারে। একইসঙ্গে দুর্নীতি রোধ, জনগণের কাছে সরকারি কমকর্তা-কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, সরকারি কাজে জনগণের মনে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, দেশে জনসেবার মান উন্নয়ন করা এবং সরকারের সঙ্গে জনগণের নৈকট্য স্থাপনের কাজে ভূমিকা পালন করতে পারে। দেশে সুশাসন ও সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আইনটির কোনো বিকল্প নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়– তথ্য অধিকার ফোরাম লক্ষ্য করছে যে, গত জুলাই-আগস্টে দেশের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পটভূমিতে সেপ্টেম্বর মাসে তথ্য অধিকার আইনের মূল পরিচালন সংস্থা ‘তথ্য কমিশন’-এর তিনজন কমিশনারের পদত্যাগের কারণে প্রায় তিনমাস ধরে এই কমিশনের যাবতীয় কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। দেশে তথ্য অধিকার আইনের সুষ্ঠু ব্যবহার বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। দেশের কর্তৃপক্ষগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ তথ্য প্রদানে অসম্মতি বা অপারগতা জ্ঞাপন করলে বা তাদের দায়িত্বে অবহেলা করলে তার বিরুদ্ধে জনগণের কোনো প্রতিকার ব্যবস্থা থাকছে না। জনগণের আবেদনকৃত অভিযোগগুলো শুনানি প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, বিরোধগুলো অমীমাংসিত রয়ে যাচ্ছে, কোনো সমাধান মিলছে না।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়– দেশে তথ্য অধিকার আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে আইনটি জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে নানাভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সরকারি ও এনজিও প্রকল্প বাস্তবায়ন, স্থানীয় প্রশাসন এবং স্থানীয় সরকার সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহে এই আইনের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। তবে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। সাধারণ জনগণের মধ্যে এই আইনটির ব্যাপারে সচেতনতার অভাব রয়ে গেছে। অনেক ক্ষেত্রে দফতরগুলোতে তথ্য-প্রদান কর্মকর্তাদের আইনটির ব্যাপারে অনীহা, তথ্য সরবরাহ প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা, তথ্য গোপন করার প্রবণতা আইনটিকে পিছিয়ে রেখেছে।
এমতাবস্থায় তথ্য অধিকার ফোরাম মনে করে– বাংলাদেশ তথ্য কমিশনে যদি কমিশনারগণ বহুদিন ধরে নিযুক্ত না থাকেন, তাহলে তা দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ এই আইনটিকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে, যা তথ্যের অবাধ প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং জনগণকে এই আইনটি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করবে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তথ্য অধিকার ফোরাম দাবী করছে– তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৪ (১) অনুযায়ী ৫ সদস্যের সমন্বয়ে অতি দ্রুত একটি বাছাই কমিটি গঠন করে অবিলম্বে তথ্য কমিশনে প্রধান তথ্য কমিশনার ও তথ্য কমিশনারগণের নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
/এএম
Leave a reply