লাভলী বিথী:
গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় ৭ সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর দুইদিন পর রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার মধ্য দিয়ে কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে সেটি অনেকটা পরিচিতিমূলক সভা ছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) থেকে ৬ সংস্কার কমিশনের সুনির্দিষ্ট ও গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানোর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক কর্মযজ্ঞ শুরু করেছে কমিশন। এতে সংবিধান ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়গুলো রাখা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে দলগুলো তাদের প্রাথমিক মতামত জানাবে। এরপর দলগুলোর সাথে আলাদা আলাদা বৈঠক শুরু হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, স্থানীয় নাকি জাতীয় নির্বাচন আগে, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, মেয়াদ, দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা, সংবিধান পুনর্লিখন না প্রণয়ন, নারী প্রতিনিধিত্ব, বিরোধীদলকে ডেপুটি স্পিকারের পদ দেয়া— এমন বেশ কয়েকটি সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়গুলো রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করবে।
কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রিয়াজ বলেন, কোন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সংস্কার বাস্তবায়ন চায়, তা রাজনৈতিক দলগুলোকে জানাতে হবে। এটি গণভোট বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে হতে পারে। আবার নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমেও হতে পারে। তাছাড়া, একইসাথে গণভোট ও নির্বাচন হতে পারে।
এদিকে, আগে কোন নির্বাচন হবে, এই বিতর্কের পাশাপাশি সংবিধান সংস্কারের বেশকিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। এক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ণ ও মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য না হলে কী হবে? এমন প্রশ্ন রাখা হয়েছিল কমিশনের সদস্যদের কাছে।
এ বিষয়ে আলী রিয়াজ বলেন, অন্তত গত এক দশক ধরে রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। সবার মধ্যে সংস্কার নিয়ে আকাঙ্খা, আগ্রহ ও প্রতিশ্রুতি রয়েছে। ফলে অনেক জায়গায় ঐকমত্য রয়েছে। তবে কিছু জায়গায় ঐকমত্য থাকবে না এটা সত্য। এক্ষেত্রে কোন রাজনৈতিক দল কি সংস্কার চেয়েছে বা চায়নি, তা জনগণ জানতে পারবে।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জাতীয় স্বার্থ, ভবিষ্যত প্রজন্ম ও আত্মত্যাগকারীদের বিষয়গুলো মাথায় রেখে রাজনৈতিক দলগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এদিকে, কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা আর যাতে ফিরে না আসে, সংস্কারে তা গুরুত্ব দিচ্ছে কমিশন। সদস্যরা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ওপর নির্ভর করছে জাতীয় সনদ ও সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ।
বদিউল আলম মজুমদার বললেন, দলগুলো যত দ্রুত ঐকমত্যে পৌঁছাবে, তত দ্রুত জাতীয় সনদ প্রণীত হবে। এর ভিত্তিতে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে।
ঐক্যমত কমিশনের সংস্কারের চূড়ান্ত প্রস্তাব বাস্তবায়ন কোন প্রক্রিয়ায় হবে তার সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ওপরই ছাড়ছেন সদস্যরা। তাদের ভাষ্য, রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া সংস্কার বাস্তবায়ন সমীচীন হবে না।
/আরএইচ/এমএন
Leave a reply