নীতীশ সরকারের মদ-নিষেধাজ্ঞার জেরে ভারতের বিহার রাজ্যের ঘরে ঘরে ‘শান্তি’ ফিরে এসেছে। রাজ্য সরকারের মহিলা বিকাশ নিগমের অধীনস্থ জেন্ডার রিসার্চ সেন্টারের সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, রাজ্যে পারিবারিক হিংসার পরিমাণ ৫৪ শতাংশ থেকে কমে ৫ শতাংশে নেমেছে।
সেন্টার রাজ্যের পাঁচটি জেলায় এই সমীক্ষা চালায়। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গ্রামীণ গোলমালের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেকটাই কমে গিয়েছে। বিরোধীদের পাল্টা দাবি, রাজ্য জুড়ে পাচারকারীরা ঘরে ঘরে মদ পৌঁছে দিচ্ছে। আপাত দৃষ্টিতে শান্তি রয়েছে মনে হলেও জেল খাটার ভয়ে অনেকেই ‘চুপচাপ’ মদ খাচ্ছেন। মদ খেয়ে হল্লাবাজী বন্ধ আছে। সে কারণেই গ্রামে ‘শান্তি’ নজরে আসছে।
রাজ্যকে পাঁচটি অঞ্চলে ভাগ করে প্রতিটি অঞ্চলের একটি করে জেলা বাছাই করা হয়। ভৌগলিক ও আর্থিক ফারাকের ভিত্তিতে নওয়াদা, পূর্ণিয়া, সমস্তীপুর, পশ্চিম চম্পারণ এবং কৈমুর থেকে নমুনা সমীক্ষা করা হয়। ২৩৬৮ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা। পাঁচটি জেলায় ১০০১ জন মহিলার সঙ্গে ২৬টি যৌথ আলোচনা, ২৪২ জন পুরুষের সঙ্গে ২০টি যৌথ আলোচনা, ৬৪৭টি কিশোরীর সঙ্গে ১০টি যৌথ আলোচনা এবং ৩০৬ জন মহিলার সঙ্গে একান্ত ব্যক্তিগত আলোচনা করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আগে এই সব বাড়ির পুরুষরা মদ্যপান করতেন।
এ ছাড়াও বিভিন্ন থানা, মহিলা থানা, মহিলা হেল্পলাইন, নেশা মুক্তি কেন্দ্র, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মুদিখানা, দোকান ও রাজস্ব বিভাগেও সমীক্ষা চালানো হয়েছে। জেলা এবং ব্লকস্তরের বিভিন্ন আলোচনা চক্র থেকেও সংগ্রহ করা হয়েছে তথ্য।
জেন্ডার রিসার্চ সেন্টারের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে মদ বন্ধ হওয়ায় ৯৯ শতাংশ মহিলা খুশি। তাঁদের বেশিরভাগই মদ বন্ধ রাখার পক্ষে। মহিলাদের বিরুদ্ধে হিংসা কমার পাশাপাশি শিশু এবং কিশোরীদের বিরুদ্ধেও হিংসা কমে গিয়েছে। নিষেধাজ্ঞার ফলে ৬ শতাংশ মহিলা আর্থিক লোকসানের অভিযোগ করেছেন।
শুধু হিংসা কমাই নয়, আর্থিক ভাবেও মহিলাদের লাভ হয়েছে। আর তারই জেরে পরিবারের শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে। রাজ্যে ৩০ শতাংশ খাদ্যদ্রব্যের ব্যবহার বেড়েছে। আগে যেখানে খাদ্যদ্রব্যের জন্য পরিবারগুলি প্রতি সপ্তাহে গড়ে ১০০৫ টাকা খরচ করত, এখন ১৩৩১ টাকা পর্যন্ত খরচ করছে বলে দাবি সমীক্ষকদের।
(সূত্র: আনন্দবাজার)
Leave a reply