বিশ্বকাপের বছরটি এর থেকে আর কতটা ভালো শুরু হতে পারত মহেন্দ্র সিংহ ধোনির? অর্ধশতরান করে, ছয় মেরে দলকে জিতিয়ে, একশোর ওপরে স্ট্রাইক রেট রেখে ভারতকে জিতিয়ে দিলেন তিনি।
বিরাটের শতরান সত্ত্বেও যে ম্যাচে ভারত প্রবল চাপে পড়ে গিয়েছিল, সেই ম্যাচটি নিজের চিরাচরিত ঠান্ডা মাথায় শেষ করলেন ধোনি। তাঁকে যোগ্য সংগত দিয়ে এই ম্যাচ শেষ করানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করলেন দীনেশ কার্তিক। প্রায় হারার মুখে থাকা ম্যাচটি জিতে সিরিজে সমতা ফেরাল ভারত।
সাধারণ রান তাড়া করার কোনো ম্যাচে বিরাট কোহলি শতরান করলে তিনিই ম্যাচ জিতিয়ে ফেরেন। কিন্তু মঙ্গলবার সেটা হয়নি। বিরাট আরও একটা অনবদ্য শতরান করলেন ঠিকই, কিন্তু এ দিন তাঁর সেই দমটা ছিল না। তাই বিরাট যখন ফিরলেন তখনও ভারতকে জেতার জন্য দরকার ৩৭ বলে ৫৫।
ধারেভারে অস্ট্রেলিয়ার থেকে ভারত যে অনেকটাই এগিয়ে সেটা বোঝার জন্য বিশেষ ক্রিকেটবোদ্ধা হওয়ার দরকার নেই। এ হেন অস্ট্রেলিয়া যখন প্রথম একদিনের ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে দিল তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। আর একটি ম্যাচ জিতলেই সিরিজ জিতে নেবে তারা, এই ভাবেই নিজের অনুপ্রেরিত করে এ দিন নেমেছিল অ্যারন ফিঞ্চের দল।
স্কোরবোর্ডে একশো ওঠার আগেই তিন উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছিল তারা। কিন্তু এর পরেই শুরু হয় শন মার্শ শো। অনেকদিন ধরেই বিশেষ রান নেই তাঁর ব্যাটে। এ কারণে তাঁকে দলের বাইরে রাখারও দাবি উঠছিল। সেই সব সমালোচনার জবাবই এ দিন দিলেন মার্শ। তাঁর ব্যাটিং তাণ্ডবের কাছে অস্ট্রেলিয়ার বাকি ব্যাটসম্যানরা ম্লান হয়ে গিয়েছিলেন।
প্রথম দিকে ভারতীয় বোলাররা দাপট দেখালেও মার্শের সামনে সবাই ফিকে হয়ে যান। মার্শের ব্যাটিং বুঝিয়ে দিচ্ছিল, নতুন বছরে নতুন প্রত্যয় নিয়ে নেমেছে অস্ট্রেলিয়া। আগের ম্যাচে ২৮৮ ভারতের কাছে সমস্যার সৃষ্টি করেছিল। এই ম্যাচে তো আরও দশ রান বেশি। ভারত কি পারবে?
এই প্রশ্নের উত্তর দিতেই ব্যাট হাতে নামেন রোহিত শর্মা এবং শিখর ধাওয়ান। আগের ম্যাচের থেকে এ দিন ভালো শুরু করেছিল ওপেনিং জুটি। কিন্তু ৫০-এর একটু আগেই ফিরে যান ধাওয়ান। ক্রিজে আসেন বিরাট।
এর পরের ঘণ্টা দুয়েক বিরাট শো-এ মেতে থাকল অ্যাডেলেড। কিন্তু মাঝেমধ্যেই মনে হয়েছে, তাঁর চেনা ঢঙে বিরাট এ দিন ছিলেন না। ফলে আস্কিং রেট সেই যে বাড়তে শুরু করে, সেটা বিরাট আউট হয়ে যাওয়া পর্যন্ত কমেনি।
ইংল্যান্ডের পর এ বার কি অস্ট্রেলিয়ার মাঠেও একদিনের সিরিজ হারবে ভারত? এই প্রশ্ন যখন মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে, তখনই নিজের পুরনো রূপ ধরলেন ধোনি। লিয়ঁর বলে ছক্কা মেরে জানান দিলেন এখনও ম্যাচ জেতেনোর ক্ষমতা রাখেন তিনি। এর পর শেষের ওভারগুলি তিনি এবং দীনেশ কার্তিক মিলে অস্ট্রেলিয়া শিবিরে পালটা চাপ দিতে শুরু করেন।
তবে অ্যাডেলেডের ৪০ ডিগ্রির গরম ধোনির ওপরে প্রভাব ফেলছিল, সেটাও বোঝা গেল যখন ওভার শেষে শুয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু সেখান থেকে উঠে দাঁড়িয়ে দলকে জেতালেন ধোনি। শেষ ওভারে ছয় মারলেন। অপরাজিত থাকলেন ৫৫ রানে।
হারের মুখে দাঁড়িয়ে থেকে সিরিজে সমতা ফেরাল ভারত। সবার নজর এ বার শুক্রবারের মেলবোর্নে। ম্যাচ যার, সিরিজ তার।
সূত্র: ভারতীয় সংবাদমাধ্যম
Leave a reply