স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে জ্বিনের কাণ্ড দেখিয়ে রাতের বেলা একের পর এক বাড়ি ও দোকান ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। গত এক মাসে একাধিক আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে কাশিয়ানীর শংকরপাশা গ্রামে। যদিও এ বিষয়টিকে এলাকার সন্ত্রাসীদের কাজ বলে আখ্যা দিয়েছেন সচেতন মহল। আর পুলিশ বলেছে বিষয়টি তারা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
কাশিয়ানীর মধুমতি পাড়ের গ্রাম শংকরপাশা। গত এক মাসে এ গ্রামেই দু’টি দোকান-ঘরসহ ৬টি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় রাতের বেলা।
যাদের ঘর পোড়ানো হয়েছে তারা হলেন, সিরাজুল মুন্সীর ছেলে শাবু মুন্সীর(৫০) ঘর, সাদেক মুন্সীর ছেলে হাসান মুন্সীর(৬০)দোকান ঘর, সামসুল মুন্সীর ছেলে লিটন মুন্সীর(৪০) দোকান ঘর, মৃত আবুল শেখের ছেলে আনোয়ার শেখ (৪৫)-এর বসতঘর এবং মৃত আবুল শেখের ছেলে মনিরুজ্জামান শেখের(৩২) ঘর।
কারা এবং কেন এসব ঘরে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে ক্ষতিগ্রস্তরাও তা বলতে পারছেন না। তাদের কোন শত্রু নাই এমনটাই তাদের ধারনা। এমনকি আনোয়ার শেখের বাড়িতে এক রাতেই ৩বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।
বিস্ময়কর হলেও সত্য যে এসব ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে, তা কেউ দেখতে পায়নি। এমনকি গ্রামে পাহারা বসিয়েও দুস্কৃতিকারীদেরকে ধরা সম্ভব হয়নি। আর এই সুযোগে এসব কর্মকাণ্ড জ্বিন করেছে, এমনটি প্রচার করা হচ্ছে সুকৌশলে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করতে।
এদিকে নিরীহ এলাকাবাসীর রাত কাটছে শঙ্কার মধ্যে। রাতের বেলা ঘুমাতে পারছেন না কেউ। কখন কার বাড়িতে আগুন লেগে যায় এই ভয়ে ভয়ে প্রতিটি রাত কাটছে এলাকাবাসীর। এ অবস্থা থেকে বাঁচতে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন ভুক্তভোগি ও এলাকাবাসী।
আনোয়ার শেখের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৩৩)বলেন, ৫ জানুয়ারি রাতে হঠাৎ করে আমার ঘরে আগুন জ্বলে ওঠে। কে বা কারা আগুন ধরিয়েছে আমরা দেখিনাই। আমাদের বাড়িতে এদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত তিনবার আগুন লাগে।এলাকায় আমাদের কোন শত্রু নাই। কেন যে আমার ঘরটি পোড়ালো তা বুঝে উঠতে পারছিনা। এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের সাজা হোক এটাই আমার দাবি।
শংকরপাশা গ্রামের মিলন শেখের স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪৮) বলেন, রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি। রাতে আমরা ঘুমাতে পারিনা। আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
শাবু মুন্সী বালেন, রাতের অন্ধকারে আমার গোয়াল ঘরে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে মসজিদের মাইকে লোকজন ডাকা হয়। এলাকাবাসী পানি দিয়ে আগুন নিভায়। এরপর থেকে আমরা আতঙ্কে আছি। রাতে ঠিকমতো ঘুমও হয়না।
রাতইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আঞ্জুরুল হাসান বলেন, প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করার জন্য হয়তো জ্বিনের কাণ্ড বলে চালানো হচ্ছে বা বাড়িতে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। যারা এসব করছে তারা হয়তো অন্য কোন বড় ধরনের অপরাধ করছে। এ বিষয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(মুকসুদপুর সার্কেল)হুসাইন মোহাম্মদ রায়হান জানান, ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ দায়ের না করলেও আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে স্ব-প্রনোদিত হয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। দোষীরা যেই হোক তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
Leave a reply