খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে এবার দেশের বিভিন্ন স্থানের রেস্তোরাঁর মান নির্ধারণে স্টিকার পদ্ধতি চালু করেছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
রবিবার রাজধানীর পল্টনের ফারস হোটেলে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।
মন্ত্রী বলেন, আপনাদের যারা ‘এ+’ প্লাস ও ‘এ’ গ্রেড পেলেন আমরা আশাকরি সরকারের দেওয়া এই স্বীকৃতিটুকু ধরে রাখবেন। রেস্তোরাঁর ভালো মান বজায় রাখতে হবে। মনে রাখবেন আমরা একাত্তরে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি, এখন যদি ব্যবসায়িক লোভ ত্যাগ না করতে পারি তাহলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা অনেকটাই কঠিন হবে।
এই উদ্যোগের আওতায় আজ রবিবার প্রথম পর্যায়ে ৫৭টি হোটেল-রেস্তোরাঁর মধ্যে ১৮টিকে ‘এ +’ এবং ৩৯টিকে ‘এ’ গ্রেডের স্টিকার দেওয়া হয়েছে। হোটেলগুলোর মানের উন্নতি -অবনতির সঙ্গে এই গ্রেড বাড়বে ও কমবে বলে জানিয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোন রেস্তোরাঁয় সবুজ স্টিকার লাগানো মানে সেখানের খাবারের মান ‘এ+’ মানে বেশ ভালো। কোন রেস্তোরাঁয় খাবারের মান একেবারেই খারাপ হলে সেই রেস্তোরাঁর সামনে লাগানো থাকবে কমলা রঙের স্টিকার।
যে কোন রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষকে কমলা রঙের স্টিকার দেয়া মানে সেই রেস্তোরাঁকে খাবারের মান উন্নত করার জন্য এক মাসের সময় বেঁধে দেয়া।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, এই স্টিকার পদ্ধতিতে গ্রেডিং সিস্টেমের আওতায় খাবারের মান, বিশুদ্ধতা, পরিবেশ, ডেকোরেশন, মনিটরে রান্নাঘরের পরিবেশ দেখা যাওয়ার ব্যবস্থা ও ওয়েটারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ভিত্তিতে রেস্তোরাঁগুলোকে চার ক্যাটেগরিতে চিহ্নিত করা হবে।
কোন রেস্তোরাঁ মান অনুযায়ী ৯০ নম্বরের বেশি স্কোর পেলে রেস্তোরাঁটি সবুজ রঙের স্টিকারযুক্ত ‘এ+’ ক্যাটেগরির বলে গণ্য হবে এবং স্কোর ৮০ এর ওপরে হলে রেস্তোরাঁটি নীল রঙের এ ক্যাটাগরির গণ্য হবে। রেস্তোরাঁর মান ৫৫ থেকে ৭৯ স্কোর লাভ করা মানে এর মান মোটামুটি সন্তোষজনক প্রমাণিত হলে এটিকে হলুদ রঙের বি ক্যাটাগরীর রেস্তোরাঁ হিসেবে গণ্য করা হবে।
হলুদ স্টিকারধারী রেস্তোরাঁ মানে একে আগামী তিন মাসের তাদের খাবারের মান ও গ্রেড উন্নতি করতে হবে।
কোন রেস্তোরাঁর স্কোর ৪৫ থেকে ৫৫ এর মধ্যে হলে এটিকে নিম্নমানের কমলা রঙের স্টিকারযুক্ত রেস্তোরাঁ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং এর কোনও গ্রেড নেই।
কমলা রঙের স্টিকারযুক্ত রেস্তোরাঁকে গ্রেড ভুক্ত হবার জন্য এক মাসের সময় বেধে দেয়া হবে এবং এর মধ্যে তারা মান উন্নয়ন করতে না পারলে তাদের লাইসেন্স বাতিল ও সিলগালা করে দেওয়া হবে।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী যে কোন হোটেল বা রেস্তোরাঁটির মান কেমন তা ক্রেতাদের খাবার পরিবেশনের শুরুতেই জানাতে হবে। আর এজন্য রেস্তোরাঁর প্রবেশ পথেই বাধ্যতামূলকভাবে লাগাতে হবে এসব স্টিকার।
একই সাথে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে ক্রেতাদের সরাসরি রেস্তোরাঁর রান্নাঘরের ছবি দেখাতে হবে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, এটি একটি আন্তর্জাতিক মানসম্মত গ্রেডিং পদ্ধতি। রেস্তোরাঁ মালিকরা বারবার মোবাইল কোর্ট কার্যক্রমে জরিমানা দেওয়ার ফলে আমাদের কাছে স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন যার ফলে আমরা তাদের জন্য এই সিস্টেম এনেছি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের এপ্রিলের ২ তারিখে কস্তুরী হোটেলে স্টিকার লাগিয়ে এই কার্যক্রমের পরীক্ষামূলক উদ্বোধন করে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
Leave a reply