কয়েদিদের দেড়শ বছরেরও বেশি সময় আগ থেকে রুটি ও গুড়ের যে সকালের খাবার দেয়া হচ্ছে, তাতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ সংক্রান্ত উদ্যোগ নিয়েছেন বলেও জানা গেছে। গত ১৫৫ বছর ধরে সারা দেশের সাধারণ কয়েদিরা রুটি ও আখের গুড় দিয়ে সকালের নাস্তা করছেন। কিন্তু গত বছরের মে মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কারা অধিদফতরের একটি সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
এতে সকালের নাস্তায় সপ্তাহের দুই দিন খিচুড়ি, চারদিন রুটি-সবজি ও বাকি দিনগুলোতে রুটি-হালুয়া পরিবেশনের কথা বলা হয়েছে। কারা অধিদফতরের সহকারী পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম গত মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে বলেন, কয়েদিরা বহুদিন ধরে সকালের খাবারে পরিবর্তন আনার দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের কথা ভেবেই এ পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে।
ঔপনিবেশিক শাসকদের ১৮৬৪ সালে বেঙ্গল কারাবিধি অনুসারে কয়েদিদের সকালের নাস্তায় রুটি ও আখের গুড় পরিবেশন করা হচ্ছে। আমিরুল ইসলাম বলেন, কাজেই এই খাবারের তালিকার পরিবর্তনের জন্য তারা এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছেন।
সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক পরিচালক নূর খান লিটন। তবে কারাগারের সার্বিক অব্যবস্থাপনা ও খাবারের নিম্ন মান নিয়েও তিনি উদ্বেগও প্রকাশ করেন।
তবে নতুন সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে কয়েদিদের পরিবেশিত খাবারে কিছুটা উন্নতি হবে বলে তিনি মনে করেন।
নূর খান বলেন, কারাগারে দর্শক যাচাই ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর পরিদর্শনের ব্যাপারে ঔপনিবেশিক আমলের দৃষ্টিভঙ্গিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা দরকার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, এ সুপারিশের বাস্তবায়নের জন্য তহবিল বরাদ্দ স্থগিত রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত ২০ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়ার পর কারা অধিদফতর দেশজুড়ে ১৩টি কেন্দ্রীয়সহ ৬৪ কারাগারে নতুন তালিকার খাবার পরিবেশন করবে।
বর্তমানে ৪০ হাজার কয়েদিদের সক্ষমতার বিপরীতে ৯০ হাজারের জন্য সকালের নাস্তায় রুটি ও গুড়সহ তিন বেলার খাবারে দুইশ ৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেন, রংপুরের উপ কমিশনার ২০১৮ সালের ৩ মার্চ রংপুর কারাগারে পরিদর্শনে যাওয়ার পর কয়েদিদের সকালের খাবারের মেন্যুতে পরিবর্তন আনার অনুরোধ করেছিলেন। এর পরেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
Leave a reply