পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতের বিমান হামলার প্রায় দুই সপ্তাহ হল, নয়া দিল্লী সেখানে হামলায় সংঘটিত ক্ষয়ক্ষতির কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। শুধু ঘটনার পরপর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছিলেন বেশ বড় সংখ্যক বিদ্রোহী হামলায় মারা গেছে।
কিন্তু বিমান বাহিনী প্রধান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রী কেউ কোনো সংখ্যা বলছেন না। এতে ভারতের ভেতরেই প্রশ্ন উঠেছে, কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলে কেন হামলা করা হয়েছিল? ঘটনার পরপর বিদেশি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে বালাকোটে ভারতীয় হামলায় কেউ মারা যাওয়ার প্রমাণ মিলেনি। শুধু একজন গ্রামবাসী আহত হয়েছেন।
ভারতের পক্ষ থেকে এরপর হামলার পর ঘটনাস্থলের স্বপ্ন রেজুলেশনের স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে দেখানোর চেষ্টা করা হয় কোথায় হামলা করা হয়েছিল।
তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তকি একটি স্যাটেলাইট পরিচালনা প্রতিষ্ঠান থেকে হাই-রেজুলেশন স্যাটেলাইট ছবি সংগ্রহ করেছে। সেগুলো যাচাই করে আজ বুধবার এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, হামলার পরও (৪ মার্চ) ঘটনাস্থলে এখনও জইশ-ই মোহাম্মদের নিয়ন্ত্রিত একটি মাদ্রাসার অন্তত ছয়টি ভবন অক্ষত অবস্থায় আছে।
হামলার পর ৪ মার্চ ঘটনাস্থলকে যেমন দেখা যাচ্ছে, গত বছরের এপ্রিল মাসের একই ঘটনাস্থলের ছবি প্রায় একই রকম দেখাচ্ছে। অর্থাৎ হামলার পর ওই এলাকার অবকাঠামোতে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এমনকি মাদ্রাসার ভবনগুলোর ছাদে বা দেয়ালে উল্লেখযোগ্য কোনো গর্তও দেখা যাচ্ছে না। এমনকি মাদ্রাসার একদম কাছে কোথাও গাছ ভেঙে পড়া বা কোনো ধরনের হামলার চিহ্নও পর্যন্ত নেই।
বিরোধী দলের পক্ষ থেকে চাপের মুখে মঙ্গলবার রাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বালাকোটের জাবা গ্রামের কাছাকাছি একটি মাদ্রাসাই ছিল বিমান বাহিনীর লক্ষ্যবস্তু। কিন্তু রয়টার্স বলছে, জাবা গ্রামের পাশ্ববর্তী যে মাদ্রাসা রয়েছে (যেটি জইশ নিয়ন্ত্রিত) সেই মাদ্রাসার ভবনে বা তার কাছাকাছি কোথাও বিমান হামলার কোনো চিহ্ন নেই।
এ বিষয়ে রয়টার্সের পক্ষ থেকে ভারত সরকারের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে কোনো জবাব দেয়নি কর্তৃপক্ষ। মিডলবারি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারনেশনাল স্টাডিজের ইস্ট এশিয়া ননপ্রলিফারেশন প্রজেক্টের পরিচালক জেফরি লইস ১৫ বছর ধরে স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণের কাজ করেন। তিনি রয়টার্সকে বলেছেন, হাই-রেজুলেশনের এসব ছবিতে বোমায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।
ভারতের পক্ষ থেকে যেসব বোমা ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে সেগুলো মাদ্রাসা ভবনের ওপর ব্যবহৃত যেসব চিহ্ন পাওয়া যেত তার কিছুই নেই বলেও জানান এই বিশ্লেষক।
রয়টার্সের রিপোর্টটি বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন এখানে।
Leave a reply