প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়ের ভুয়া পরিচয়ে প্রতারণা করছে একটি ডেভেলপার গোষ্ঠী। বাড্ডা, বারিধারা, বসুন্ধরা, টঙ্গীসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ফ্ল্যাট ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে প্রায় ১৫ বছর ধরে। বিষয়গুলো নিয়ে আদালতে মামলা চলায়, ভিন্ন নাম দিয়ে একই কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ ওঠেছে চক্রটির বিরুদ্ধে।
নির্মাণাধীন ভবনগুলোর সামনের অংশ দেখলে মনে হবে, কাজ শেষ। বাইরে সাটানো ব্যানার, চলছে ফ্ল্যাট বিক্রি। প্রকৃত অবস্থা বোঝা যায় ভবনের পেছনের দিকে গেলে। নয় বছরে কেবল ছাদ তোলা হয়েছে নয় তলার। তার মাঝেই নিজেদের অংশের ৯০ ভাগ ফ্ল্যাট বিক্রি করে উধাও পসেসিভ ডেভেলপার।
জমির মালিক হাবিবুর রহমান, ৩ বছরে ১০ তলা বিল্ডিং কমপ্লিট করার কথা ছিলো। কিন্তু গত ৪ বছর ধরে তারা আর যোগাযোগই করে না।
পটুয়াখালীর সুমি আক্তারের মা ফ্ল্যাট কিনেছেন ভবনটির চার তলায়। গ্রামের সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা জমা দিয়েছেন। ফ্ল্যাট বুঝে না পাওয়ায় এখন নিজেই বাকি কাজ সারছেন, থাকার ব্যবস্থা করতে। অন্যদের অবস্থাও এমন।
ব্যানারের ঠিকানা ধরে ডেভেলপারের খোঁজে সাভারে যমুনা নিউজ। ঠিকানা আছে কিন্তু পসেসিভ ডেভেলপার নামে কোন প্রতিষ্ঠান নেই। এর মালিক হিরুজ্জামানকেও চেনেন না ভবন মালিক।
খোঁজাখুজিতে পাওয়া তথ্য আরো ভয়াবহ। এয়ার কন্ডিশন মেরামতের কাজ করতেন হিরুজ্জামান। দুজনকে সাথে নিয়ে প্রথমে খোলেন পজেটিভ ডেভেলপমেন্ট। টঙ্গীসহ রাজধানীর বাড্ডা, বারিধারা, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন স্থানে ফ্ল্যাট ব্যবসার নামে প্রতারণা করে তারা। কাজ শেষ না করে লাপাত্তা, একই ফ্ল্যাট তিন জনের কাছে বিক্রিসহ নানা ধরনের প্রতারণা করে গোষ্ঠিটি। এ নিয়ে মামলার পর সাজাও খেটেছে হিরুজ্জামানের দুই সঙ্গী বশির ও স্বপন। পরেই প্রতিষ্ঠানের নাম পাল্টে ফেলেন হিরুজ্জামান।
যোগাযোগ করা হলে ঠিকানা দিতে রাজি হলেন না হিরুজ্জামান। তিনি নিজেকে নিক্সন চৌধুরীর লোক হিসেবে পরিচয় দেন। বাস্তবতা হলো তাকে চেনেনই না নিক্সন চৌধুরী।
একদিন পর হাতিরপুলের একটি মার্কেটে দেখা করেন হিরুজ্জামান।
রিহ্যাব সহ-সভাপতি নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন বললেন, প্রতারকরাই আবাসন ব্যবসায় বদনামের মূল কারণ। তিনি আরো বলেন, রং মিস্ত্রী, রাজমিস্ত্রী ডেভেলপার কোম্পানি খোলে গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করে। আমি রিহ্যাবে ডুকার পর এই সমস্যাগুলো নিণর্য় করেছি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতারণা রোধে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজউকের পাশাপাশি সজাগ হতে হবে ক্রেতাদের।
Leave a reply