রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায় চাঞ্চল্যকর ছেলের হাতে বাবা আইয়ুব আলী প্রামাণিক (৬০) হত্যা মামলায় ছেলে আলীম প্রামাণিক (৩০) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড। এছাড়া মামলার তিন নম্বর আসামীকে একবছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজবাড়ীর জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা গতকাল ১৩ই মে পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের শাহমীরপুর গ্রামে টিউবওয়েল মিস্ত্রি আইয়ুব আলী প্রামাণিক হত্যা মামলার এই রায় দেন।
জানা যায়,পারিবারিক কলহের জের ধরে বিগত ২০১৪ সালের ৫ অক্টোবর রাতে ছেলে আব্দুল আলিম তার বাবা কে নির্মমভাবে হত্যা করে অন্যান্যদের সহযোগিতায় মৃতদেহ বস্তায় ভরে।এরপর সে নৌকায় করে বাড়ির পাশের পদ্মা নদীতে বালু ভর্তি অপর আরেকটি বস্তার সাথে লাশের বস্তা বেধে লাশটি নদীতে ফেলে দেয়।ঘটনার ২৬ দিন পর বিগত ২০১৪ সালের ৩১ শে অক্টোবর সকালে পদ্মা নদীর শাহমীরপুর ঘাটের অদূরে নদী থেকে বস্তাবন্দী আইয়ুব আলী প্রামাণিকের লাশ পুলিশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই চাঁদ আলী বাদী হয়ে পাংশা থানায় অজ্ঞাত আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।পাংশা থানার মামলা নং -১।তারিখ ১/১১/২০১৪।ধারা ঃ ৩০২/২০১/৩৪দঃবিঃ।
এ মামলা দায়েরের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটনসহ ঘটনার মূল হোতা নিহতের ছোট ছেলে আলিম কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।থানায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ও আদালতে পিতা আইয়ুব আলী প্রামাণিক হত্যার দায় স্বীকার করে আলীম।
এর আগে পিতাকে হত্যার পর নিজেকে রক্ষা করতে ঘাতক ছেলে আলীম নিখোঁজের ঘটনা উল্লেখ করে গত ২২ শে অক্টোবর পাংশা থানায় জিডি নং ৬৫৬ এন্ট্রি করে।
আদালত সূত্র জানায়,গতকাল ১৩ মে এ হত্যা মামলার রায়ে জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে নিহতের ছেলে আলিম প্রামাণিক কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ায় শাহ মিরপুর গ্রামের শাহাদত প্রামাণিকের ছেলে ফিরোজ প্রামাণিক কে ১ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।এছারাও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নিহত আইয়ুব আলীর স্ত্রী আলেয়া বেগম কে বেকসুর খালাস প্রদান করেছে আদালত।রায় ঘোষণাকালে দণ্ড প্রাপ্তরা আদালতে হাজির ছিলেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের পিপি এ্যাডভোকেট মোঃ উজির আলী সেখ এবং আসামী পক্ষের এ্যাডভোকেট তসলিম আহমেদ তপন মামলা পরিচালনা করেন।
Leave a reply