এ যেন কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসার মতো কাহিনী। মানিকগঞ্জে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে এলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর দুই কর্মকর্তার কোটি টাকার চাঁদা দাবির বিষয়টি। সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, দাবি করা চাঁদার টাকা না দেয়ার সাথে ডাকাতির ঘটনার সংযোগ থাকতে পারে।
এ তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর জেলাজুড়ে চলছে তোলপাড়। অভিযুক্তরা বিষয়টি অস্বীকার করলেও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মানিকগঞ্জে স্বর্ণের দোকানে ডিবি পরিচয়ে ফিল্মি স্টাইলে ডাকাতির পরই চাঁদাবাজির বিষয়টি সামনে আনেন দোকান মালিক। তিনি জানান, মাস খানেক ধরে পুলিশের দুই কর্মকর্তা তাদের কাছে চাঁদা চেয়ে আসছেন।
স্বর্ণ শিল্প মালিক সমিতির নেতাদের অভিযোগ, একটি গোয়েন্দা সংস্থা ও জেলা পুলিশের দুই কর্মকর্তা ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। কয়েক দফায় তাদেরকে ডেকে নেয়া হয়, অফিসেও।
মানিকগঞ্জ স্বর্ণ শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রঘুনাথ রায় জানান, চাপের মুখে বিভিন্ন দোকান থেকে তারা চাঁদার টাকা সংগ্রহও শুরু করেছিলেন। সমিতির সভাপতি আতোয়ার রহমান জানান, অনেক দরকষাকষির পর ওই দুই কর্মকর্তা তাদের দাবিকৃত টাকার পরিমাণ ৭০ লাখে নামিয়ে আনেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার অভিযুক্ত সহকারী পরিচালক আসিফ চৌধুরী বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন। অন্যদিকে, টেলিফোনে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল আউয়াল।
ঘটনায় বেশ বিব্রত স্থানীয় প্রশাসন। প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেন মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, অভিযোগ যার বিরুদ্ধেই হোক- তিনি রাজনৈতিক নেতা কিম্বা পুলিশের কেউ হোন না কেন- আমরা তাদেরকে আদালত পর্যন্ত নিয়ে যাবো।
গত বুধবার রাতে মানিকগঞ্জ শহরের স্বর্ণকার পট্টিতে ডাকাতি ও পরে ডাকাতদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় মানিকগঞ্জ সদরে ১টি ও সাটুরিয়া থানায় ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ডাকাতির ঘটনার পর থেকে শহরের অর্ধশতাধিক স্বর্ণের দোকান বন্ধ রয়েছে।
Leave a reply