সরকারিভাবে গম-ধান ক্রয়, কর্মসৃজন প্রকল্প, টিআর-কাবিখা, জমি আছে ঘর নেই প্রকল্প ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দফতরি নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ সংগ্রহ এবং প্রকাশের আগে অনুমতি লাগবে।
একই সঙ্গে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রেস ক্লাবের নেতা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ইউএনও জাহাঙ্গীর আলম।
সম্প্রতি স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। তার এমন বিতর্কিত মন্তব্যের একটি অডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পরার পর জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মীরা বলছেন, জেলার সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ইউএনও। তার এমন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ প্রেস ক্লাব ও রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতারা। তারা ইউএনও’র বক্তব্য প্রত্যাহারের জোর দাবি জানিয়েছেন।
ভাইরাল হওয়া অডিওতে কামারখন্দ প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়াকে উদ্দেশ করে ইউএনও মো. জাহাঙ্গীর বলেছেন, ‘এখানে (কামারখন্দ) বাইরের সাংবাদিক একদিনে এসে কিছু বুঝবে?
যেকোনো নেগেটিভ নিউজ করলে আমার সঙ্গে কথা বলে তারপর করবে। বাইরের সাংবাদিক যেন আমার কাছে কম আসে। আমার কথা হচ্ছে, উপযুক্ত চ্যানেলের মাধ্যমে আসতে হবে। বাইরের সাংবাদিক এলে নক করে আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিরাজগঞ্জ জেলার সাংবাদিকদের কামারখন্দ উপজেলায় প্রবেশ করতে বা সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ করতে স্থানীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমতি এবং আমার (ইউএনও) অনুমতি নিতে হবে।
গঠনতন্ত্র করেন, বাইরের সাংবাদিক বা জেলার সাংবাদিক এলে সভাপতিকে জানিয়ে প্রতিবেদন করবে, এটা গঠনতন্ত্রের মধ্যে ঢোকানো আছে না? নীতিমালায় ঢুকিয়ে দেন এটা।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের (কামারখন্দের) সাংবাদিক ভালো রিপোর্ট করবে, এদের ভালো রাখার দায়িত্ব আমাদের। কামারখন্দের সাংবাদিকদের ভালো রাখার দায়িত্ব আমার।
‘অতএব যদি তাদের (সাংবাদিকদের) অর্থনৈতিক সুবিধা দরকার হয় আমি দেব। সমস্যা কী? আমাদের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার মতো কোনো অভাব নেই।’
‘বিভিন্ন জায়গা আছে। দুর্নীতির নিউজ না করলে আমরা অর্থনৈতিক সুবিধা দেব, সমস্যা আছে আপনার? বাইরের সাংবাদিক কেন এখানে আসবে?’
এ বিষয়ে কামারখন্দ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ৬-৭ দিন আগে ইউএনও কামারখন্দের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।
মতবিনিময়ের সময় ইউএনও বলেছেন, কোনো নেগেটিভ নিউজ থাকলে এবং জেলার কোনো সাংবাদিকরা কামারখন্দে এসে নিউজ করতে চাইলে অন্তত উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি-সম্পাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। নিউজ প্রকাশ করার আগে উপজেলার প্রধান হিসেবে তাকেও এ বিষয়ে অবহিত করার উচিত বলেছেন।
ইউএনও মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার উপজেলায় কোনো নেগেটিভ নিউজ হলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনেক সময় জবাবদিহি করতে হয়। যেহেতু সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি তাই কামারখন্দের যেকোনো নেগেটিভ নিউজ করার আগে জেলার সাংবাদিকদের উপজেলার প্রেস ক্লাবের নেতাদের সঙ্গে আলোচনাসহ আমার মতামত নিলে ভালো হয় বলেছি। আমি কাউকে আহত করার জন্য এমন মন্তব্য করিনি।
Leave a reply