শান্তির পক্ষে কথা বলায় শিরোশ্ছেদের দ্বারপ্রান্তে সৌদি আলেম: অ্যামনেস্টি

|

সৌদি আরবের বিখ্যাত আলেম শেখ সালমান আল আওদার বিচার শুরু হতে যাচ্ছে। মাস ছয়েক স্থগিত রাখার পর আগামী রোববার ফের শুরু হবে শান্তির পক্ষে কথা বলা এই আলেমের বিচার।

তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আল-আওদার পরিবার ও সৌদি গণমাধ্যম জানিয়েছে, কৌঁসুলিরা তার মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রকাশ করা হয়নি।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, আওদার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিশোধ নিতেই এই বিচার করা হচ্ছে।

নব্বইয়ের দশকে মুসলিম ব্রাদারহুড সংশ্লিষ্ট ইসলামী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আটক হওয়া ২০ ব্যক্তির মধ্যে তিনি একজন। অতিরক্ষণশীল সৌদি আরবে ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমনের অংশ ছিল ওই আটকাভিযান।

অ্যামনেস্টির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক গবেষণা প্রধান লিন মালুফ বলেন, আমরা খুবই উদ্বিগ্ন যে শেখ সালমান আল-আওদাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হতে পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বছর দুয়েক আগে তিনি আটকের পর বীভীষিকাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে শেখ আওদাকে। বিচারের আগে তাকে দীর্ঘদিন আটক রাখা হয়। মাসের পর মাস নির্জন কারাবাসে আটক ছিলেন তিনি। এ সময়ে কারও সঙ্গে তাকে দেখা করতে দেয়া হয়নি। কারাগারে মারাত্মক নির্যাতনের শিকার হন এই মুসলিম ধর্মীয় নেতা।

অ্যামনেস্টির তথ্যানুসারে সৌদি আরব ও কাতারের মধ্যকার বিবাদ মীমাংসা করে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে একটি টুইট পোস্ট করার কয়েক ঘণ্টা পরই তিনি আটক হন।

২০১৭ সালের জুনে দোহার সঙ্গে সব ধরনের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেশটিকে একঘরে রাখে সৌদি আরব এবং মিত্ররা। কাতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দেশটি ইসলামী উগ্রপন্থিকে সহায়তা করছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করছে কাতার।

আল-আওদার পরিবার জানায়, সৌদি আরব দাবি করেছে যে আল-আওদা ও অন্য বিখ্যাত ব্যক্তিরা যাতে এই বিতর্কে রিয়াদকে সমর্থন করেন। কিন্তু তিনি সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

কৌঁসুলিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ফেব্রুয়ারিতে তার বিচারের শুনানি স্থগিত হয়েছিল। অ্যামনেস্টি জানায়, সৌদি আরব সব সময় দাবি করে আসছে যে, তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই বিচার কিংবা অন্যান্য ক্ষেত্রেও তারা একই দাবি করছে। গত এপ্রিলে ৩৭ জনের শিরোশ্ছেদ করেছিল দেশটি। কিন্তু এ সব বিচার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply