বাসস:
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দমন-পীড়নের কারণে সৃষ্ট রোহিঙ্গা সঙ্কটের টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে কম্বোডিয়ার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে তাদের ঘরে ফিরতে পারে, সেজন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা দ্বিপক্ষীয় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের কাছেও আমি সহযোগিতা চাইছি, যাতে এ সঙ্কটের একটি টেকসই সমাধানে আমরা পৌঁছাতে পারি।’
আজ সোমবার নমপেনে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে শেখ হাসিনা একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সাম্প্রতিক কিছু আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। দুই পক্ষই সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারের কথা বলেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়েও কথা বলেছি, যা আমাদের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি বিনষ্টের হুমকি তৈরি করছে।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশকে এখন ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বইতে হচ্ছে, যাদের মধ্যে প্রায় ৭ লাখ মানুষ মিয়ানমারে সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের বিষয়েও আলোচনা করেছেন, যা কিনা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মর্মে হুন সেন আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার উভয়েই এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুশৃঙ্খলভাবে নিরাপদে স্বদেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে একযোগে কাজ করবে।
তিনি বলেন, ‘দেশে ১৬ কোটি মানুষ থাকার পরেও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় প্রদান করে এবং তাদের বিষয়টি নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়ায় আমরা তাদের (বাংলাদেশের) প্রশংসা করছি।’
কম্বোডিয়াকে বাংলাদেশের নিকটতম আঞ্চলিক প্রতিবেশি আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই দুটি দেশ একই রকম শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের প্রত্যাশী। তিনি বলেন, আমরা অনেক আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক ফোরামে পরস্পরকে নিবিঢ়ভাবে সহযোগিতা করে থাকি বিশেষ করে এআরএফ, আসেম, এসিডি এবং জাতিসংঘে।কম্বোডিয়ায় তাঁর সফরকে অত্যন্ত ফলপ্রসু আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর এবং প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের আলোচনার ফলে দুই দেশের সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
এর আগে বাণিজ্য-বিনিয়োগ, পর্যটন ও তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা এগিয়ে নিতে কম্বোডিয়ার সাথে ৯টি সমঝোতা স্মারক ও একটি চুক্তি করে বাংলাদেশ। সকালে দুই প্রধানমন্ত্রী হুন সেন ও শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে কর্মকর্তারা এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেন।
সফর শেষে মঙ্গলবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে।
Leave a reply