চোখের জলে টেনিসকে বিদায় জানালেন রাশান গ্লামার গার্ল মারিয়া শারাপোভা। মূলত কাঁধের ইনজুরির কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাঁচবারের এই গ্লান্ডস্ল্যাম জয়ী। ২০১২ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেন জয়ের মধ্য দিয়ে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ার স্ল্যাম।
শারাপোভার অবসরের পর আলোচিত হচ্ছে সবশেষ ইউএস ওপেনে সেরিনা উইলিয়ামসের বিপক্ষের ম্যাচটি। আধঘণ্টা আগেও তার কোর্টে নামা নিয়ে ছিল সংশয়। কাঁধের চিকিৎসা শেষে সে দিন কোর্টে নামতে পারাটাই জয়ের মতো ছিলো টেনিস সেনসেশনের কাছে। ঐ ম্যাচে ১-৬, ১-৬ সেটে হারের পরেই বুঝতে পারেন কোথায় থামতে হবে।
১৯৮৭ সালে জন্ম নেয়া শারাপোভার টেনিসের হাতেখড়ি বাবার হাত ধরে, ৪ বছর বয়সে। ৬ বছরে ভর্তি হন মস্কো টেনিস একাডেমিতে। ২০০০ সালে ডাক পান রাশিয়ান জুনিয়র টেনিস দলে। ২০০৩ সালে অংশ নেন প্রথম বড় কোনো টুর্নামেন্টে।
২০০১ সালের এপ্রিলে পেশাদার টেনিসে পা রাখার পর ২০০৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে উইম্বলডন জিতে নেন শারাপোভা। দুই বছর পরে জেতেন ইউএস ওপেন। ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন আর ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা ঘরে তোলেন দু’বার ২০১২ ও ২০১৪ সালে। সাবেক এক নম্বর ক্যারিয়ারে জিতেছেন ৩৬টি ডব্লুটিএ শিরোপা।
ক্যারিয়ারের কঠিনতম সময় পার করেছেন ২০১৬ সালে। ২০০৬ সাল থেকে হৃদরোগের ঔষুধ মেলডোনিয়াম নেয়ায় অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ডোপ টেস্টে ব্যর্থ হয়ে ১৫ মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়েছেন। আপাতত ক’টা দিন নিজেকে সময় দিতে চান বহু পুরুষের হৃদয়ে ঝড় তোলা এই সুন্দরী।
এদিকে, শারাপোভার হঠাৎ বিদায় মেনে নিতে পারছেন না টেনিস তারকারা। নোভাক জোকোভিচ যেমন বলেছেন, গত পাঁচ, ছয় বছরের চোট অস্ত্রপচারসহ মারিয়া যে সমস্ত প্রতিবন্ধকতার সাথে লড়েছে। তা তাকে একজন দুর্দান্ত যোদ্ধা বানিয়েছে। আমি দুঃখিত যে তাকে এই মুহূর্তে বিদায় নিতে হয়েছে। তবে সে চ্যাম্পিয়ন স্পোর্টসম্যান। তার একটি দুর্দান্ত ক্যারিয়ার ছিল- সে নিজেকে নিয়ে গর্ব করতে পারে।
আরেক টেনিস তারকা পেত্র কিতোভা বলেন, আমি এটা মেনে নিতে পারছি না। আমি জানি মারিয়া, বড় যোদ্ধা, শক্ত প্রতিযোগী। কোর্ট এবং কোর্টের বাইরে তার অর্জনের জন্য আমার শ্রদ্ধা থাকবে সব সময়।
২৮ বছরের টেনিস ক্যারিয়ারের যেখানে শেষ, সেখান থেকেই নতুন শুরু করতে চান মারিয়া শারাপোভা। হয়তো অন্য কোনো অঙ্গনে রাজত্ব করার অপেক্ষা এই রুশ তারকার।
Leave a reply