জীবনের গল্প থামিয়ে চলে গেলেন কিংবদন্তী সঙ্গীত এন্ড্রু কিশোর। অসুস্থতা চরম আকার ধারণ করার আগ পর্যন্ত নিয়মিত ছুটে যেতেন রাজশাহীতে। তার স্বজনরা জানান, ২০১১ সাল থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর একবার রাজশাহীতে উপস্থিত হতেন তিনি।
সংগীতের ওস্তাদ আব্দুল আজিজ বাচ্চুর ছাত্র ছিলেন এন্ড্রু কিশোর। গুরুর নামে রাজশাহীতে ‘ওস্তাদ আব্দুল আজিজ বাচ্চু স্মৃতি সংসদ’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। ২০১১ সালে রাজশাহীতে এই সংগঠন তৈরি করা হয়। সেই সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। বর্ষব্যাপী সংগঠনের ত্রৈমাসিক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন থাকতো। অনুষ্ঠানে রাজশাহীর প্রত্যন্ত এলাকার একেকটি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হতো। প্রতিটি অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব উপস্থিত থাকতেন। গান শুরুর আগে ওস্তাদ আব্দুল আজিজ বাচ্চুর ওপরে আলোচনা হতো। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য তিনি রাজশাহীতে ছুটে যেতেন বারবার। যখন মরণঘাতী ক্যান্সার চরম আকার ধারণ করলো সে সময় তিনি এই সংগঠনের সভাপতিত্বের দায়িত্ব দিয়ে গেছেন তার বাল্যবন্ধু রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান দ্বীপকেন্দ্রনাথ দাসের ওপরে।
তার মৃত্যুতে সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বভাবতই রাজশাহীতে শোকের তীব্রতা আরও বেশি। রাজশাহীর সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক মানুষ ছুটে যান তাকে এক নজর দেখতে। ছিলেন তার সংগঠনের সভাপতি ও বাল্যবন্ধু দ্বীপকেন্দ্রনাথ দাস এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী মঈনুল ইসলামও। তারাই জানালেন, মৃত্যুর আগে এন্ড্রু কিশোর সংগঠনের দায়িত্ব হস্তান্তর করে গেছেন।
বন্ধুকে হারিয়ে শোকাহত দ্বীপকেন্দ্রনাথ দাস জানান, রাজশাহীতে ওস্তাদ আব্দুল আজিজ বাচ্চুর ‘সুরবাণী সংগীত বিদ্যালয়’–এর ছাত্র ছিলেন দু’জনই। তারপরে রাজশাহী সিটি কলেজে একসাথে বাণিজ্য বিভাগে বিভাগে পড়াশোনা করেন। সেখানেই গাঢ় হয় বন্ধুত্ব।
উল্লেখ্য, ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়ে সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে গত ২০ জুন রাজশাহীতে বোন শিখা বিশ্বাসের বাসায় ওঠেন এন্ড্রু কিশোর ও তার স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু। রাজশাহীতে আসার পর থেকেই তিনি আর ভালো করে কথা বলতে পারেননি। রোববার থেকেই এন্ড্রু কিশোরের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সোমবার সন্ধ্যায় তো পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলেই গেলেন।
Leave a reply