৪০০ বছরে ভারতের গ্রামটিতে জন্মায়নি কোনো শিশু!

|

ছবি: সংগৃহীত।

শিশু ছাড়া কোনো জনপদ ভাবতে পারেন? সেটি যদি হয় আবার গ্রাম, তাহলে শিশুবিহীন গ্রাম হয় না বলে আপনি রায়ই দিয়ে দিতে পারেন। তবে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ভারতের মধ্য প্রদেশে আছে এমনই একটি গ্রাম, যেখানে গত ৪০০ বছরের মধ্যে একটি শিশুও জন্মায়নি। শঙ্ক শ্যাম জি নামের এই গ্রামের অধিবাসীদের বিশ্বাস, গ্রামটি অভিশপ্ত। স্বয়ং ঈশ্বর এই গ্রামের নারীদের অভিশাপ দিয়েছেন বলেই দাবি তাদের। তাই গ্রামের পরম্পরা মেনে গত ৪০০ বছরে কোনো শিশুকেই এই গ্রামের মাটিতে জন্মাতে দেয়া হয়নি। অবশ্য গ্রামের বাহিরে জন্মের পর শিশুদের একসময় ফিরিয়ে আনা হয় গ্রামটিতে। সূত্র: এনডিটিভি।

মূলত, গ্রামের নারীরা সন্তান ধারণ করতে পারলেও সেই শিশুকে কোনো হাসপাতালে বা বাড়িতে ভূমিষ্ঠ করতে পারেন না তারা। প্রচলিত নিয়ম হলো, শিশু জন্মের আগে প্রসূতি মাকে পার করতে হবে গ্রামের সীমানা। গ্রামের বাইরে একটি বিশেষ ঘরও তৈরি আছে। সেখানে গর্ভবতী মায়েদের প্রসবকালীন এবং পরবর্তী সমস্ত সেবা-শুশ্রুষার ব্যবস্থা আছে।

বিগত ৪০০ বছর ধরে এই একই পরম্পরা মেনে আসছেন এই গ্রামের অধিবাসীরা। তাদের দাবি, এর আগে বেশ কয়েকজন এই রীতির বিরুদ্ধে গিয়ে গ্রামেই সন্তান প্রসব করেন। তবে প্রতি ক্ষেত্রেই হয় মৃত শিশু ভূমিষ্ঠ হয়েছে, নতুবা প্রসবের সময়ই করুণ মৃত্যু হয়েছে মায়ের।

গ্রামবাসীদের দাবি, এই গ্রামের ওপর অভিশাপ আছে স্বয়ং ঈশ্বরের। এ নিয়ে একটি ঘটনাও প্রচলিত আছে। শোনা যায়, ১৬ শতাব্দীর দিকে এই গ্রামে একটি মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়। নির্মাণাধীন সেই মন্দিরের পাশেই একদিন এক গৃহিণী গম ভাঙছিলেন। আর সেই শব্দে বিরক্ত হয়ে ঈশ্বর অভিশাপ দেন, এই গ্রামের মাটিতে কোনো নারীই সন্তান জন্মদান করতে পারবে না। এরপর থেকেই চলে আসছে এই প্রচলন।

স্থানীয়রা জানান, এই গ্রামে একটি হাসপাতাল থাকলেও সেখানে অন্যান্য রোগের চিকিৎসার জন্য যান গ্রামবাসীরা। তবে সন্তান জন্মদানের কাজ হয় গ্রামের বাইরেই।

এদিকে, গ্রামের নারীদের ওপর অভিশাপ থাকলেও পুরুষরা পেয়েছেন আশির্বাদ। স্থানীয়দের দাবি, এই গ্রামে কোনো পুরুষ কখনও নেশায় আসক্ত হন না। এমনকি কোনো মাংসও খান না তারা। আর এই অভ্যাসের প্রচলনও প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply