একটি ঝুলিয়ে রেখে অন্য সংগঠনকে নামের ছাড়পত্র দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

|

মোবাইল ফোন টেকনিশিয়ানদের জন্য সংগঠন করা নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। অভিযোগ রয়েছে, একটি সংগঠনের নামের ছাড়পত্র প্রদানের কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় তড়িঘড়ি করে বিধিবহির্ভূতভাবে অন্য একটি সংগঠনকে নামের ছাড়পত্র দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এমনকি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মতামত নেয়ার বিধান থাকলেও তা মানা হয়নি।

দেশে প্রতিদিন প্রায় ৩ লাখের বেশি মোবাইল হ্যান্ডসেট সার্ভিসিং করা হয়। আর এই সার্ভিসিং পেশার সাথে জড়িত আছে প্রায় ৫ লাখের বেশি টেকনিশিয়ান। এই বিপুল সংখ্যক টেকনিশিয়ানদের জন্য সংগঠন করার লক্ষ্যে, বাংলাদেশ সেলফোন রিপিয়ার টেকনিশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন (বিসিপিআরটিএ) ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর টিও লাইসেন্স এবং নামের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করে।

সেলফোন টেকনিশিয়ানদের সংগঠনের ছাড়পত্র দেয়ার কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায়ই বাংলাদেশ মোবাইল ফোন সার্ভিসিং ট্রেডার্স নামে সমজাতীয় অন্য একটি সংগঠন নামের ছাড়পত্র এবং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে। অভিযোগ উঠেছে, আইন বহির্ভূতভাবে সংগঠনটিকে তড়িঘড়ি করে মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে ছাড়পত্র দিয়ে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিটিও শাখা।

বিসিপিআরটিএর আবেদনকারী হাজবুল আলম জুলিয়েট জানালেন, তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৫ নভেম্বর একই ধরনের অ্যাসোসিয়েশন আছে কিনা তা জানতে চেয়ে যৌথ মূলধনি কোম্পানিতে চিঠি পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টিও শাখা। এর জবাবে ২৩ অক্টোবর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এই নামে কোন সংগঠন নিবন্ধিত নেই বলে জানায় সংস্থাটি। এর পাশাপাশি তারা প্রস্তাবিত নামটি সংরক্ষণ করে রাখে। এরপর মতামত জানতে চেয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সিকে চিঠি পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিটিও শাখা।

জবাবে, সংগঠনটিকে লাইসেন্স প্রদানের জন্য নামের ছাড়পত্র প্রদানে অনাপত্তি দেয়া যায় বলে মতামত দেয়। অথচ পরে আবদেন করা মোবাইল ফোন সার্ভিসিং ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএসএ) জন্য এরূপ কোনো মতামতের তোয়াক্কাই করেনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিটিও শাখা।

এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রবিউল আলম সৈকত জানালেন, সমজাতীয় একটি সংগঠনের লাইসেন্স প্রদানের কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় অন্য কোনো সংগঠনকে ছাড়পত্র দেয়া বাণিজ্য সংগঠন আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং নিরাপত্তা এজেন্সির মতামত ছাড়াই শুধুমাত্র সংগঠনের নামের ছাড়পত্র পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন, বিএমএসএর সদস্য সচিব সামছুদ্দিন ফয়েজ। আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিটিও পরিচালক জানান, ছাড়পত্র অনুমোদনের সাথে সংশ্লিষ্ট আছেন সহকারী সচিব সুবর্ণা সরকার। অথচ তিনি বিষয়টি মনেই করতে পারছেন না।

প্রসঙ্গত, এরই মধ্যে বিষয়টি বাণিজ্যমন্ত্রীর নজরে এনেছে বিসিপিআরটিএ।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply