রাশিয়ার সামরিক অভিযানে ইউরোপজুড়ে সৃষ্টি হবে স্নায়ুযুদ্ধ পরিস্থিতি: গবেষণা

|

ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকেই এর প্রভাব নিয়ে চলছে নানান হিসেব-নিকেশ। যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটোর সমর্থনও ঠেকাতে পারেনি ইউক্রেনে পুতিনের হামলাকে। এ অবস্থায় বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘায়িত হবে না যুদ্ধ, তবে এর প্রভাব থাকবে বহুদিন। একদিকে রাশিয়া, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউভুক্ত দেশগুলোর সামরিক হুমকি-হুঁশিয়ারী অব্যাহত থাকবেই। ফলে, পুরো অঞ্চলজুড়ে সৃষ্টি হবে স্নায়ুযুদ্ধ পরিস্থিতি।


বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, যুদ্ধ খুব বেশিদিন স্থায়ী না হলেও এর প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। এক দিকে অব্যাহত থাকবে রুশ হুমকি-হুঁশিয়ারী। অন্যদিকে এর জবাবে সামরিক সক্ষমতা বাড়াবে ইইউভুক্ত দেশগুলো, শক্তিশালী করা হবে সামরিক জোট ন্যাটোকে। ফলে দীর্ঘ সময় ধরেই সামরিক উত্তেজনা বিরাজ করবে ইউরোপের পূর্বাঞ্চলে।

এ প্রসঙ্গে ইউরোসিয়া গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও বিখ্যাত মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ইয়ান ব্রেমার বলেন, গত কয়েক দশকের মধ্যে এত বড় সামরিক আগ্রাসন চালায়নি রাশিয়া। এতটা ব্যাপক সামরিক প্রস্তুতি ওই অঞ্চলে ইউরোপের কোনো দেশ কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের নেই, এ কথা ন্যাটোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই এটা স্পষ্ট যে, ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়া সহজে ছাড় দেবে না। আবার নিজেদের রক্ষায় এরই মধ্যে পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে ইইউভুক্ত দেশগুলো। ফলে সবসময়ই ওই অঞ্চলে যুদ্ধ পরিস্থিতি থাকবেই। যেমনটা হয়েছিলো স্নায়ুযুদ্ধের সময়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের পর আরও শক্তিশালী করা হবে ন্যাটো জোটকে। রোমানিয়া, পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়ার মতো দেশগুলো পরিণত হবে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী ঘাটিতে।

ইয়ান ব্রেমার আরও বলেন, পশ্চিমা শক্তির কাছে ইউক্রেন কোনো ফ্যাক্টর নয়। এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর আচরণই তার প্রমাণ। আসলে পশ্চিমা শক্তি চায় ইউক্রেনের বাইরে রাশিয়াকে রুখতে, ইউক্রেনের ভেতরে নয়। ফলে ন্যাটো আগের চেয়ে এখন অনেক শক্তিশালী হবে। এটাই বর্তমান মার্কিন সরকার চায়।

এদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমাদেশগুলো একাট্টা হলেও, মস্কোর সাথে থাকবে না পশ্চিমাবিরোধী দেশগুলো, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইরান রাশিয়াকে সমর্থন দিলেও, এই বলয়ের বাইরে থাকবে চীন।


ইয়ান ব্রেমার আরও জানান, স্পষ্টভাবেই বিশ্ব দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়বে। একপাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। অন্যদিকে, রাশিয়ার সাথে থাকবে অনুগত কয়েকটি দেশ। তবে চীন প্রকাশ্যে সমর্থন দেবে না রাশিয়াকে। কারণ এতে দেশটি তার বড় ধরনের বাজার হারাবে।

তবে স্নায়ুযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা রাশিয়ার চেয়ে ইউরোপের জন্যই বেশি ক্ষতির কারণ হবে বলে ধারণা গবেষকদের।


/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply