আতঙ্কে প্রিয় জন্মভূমি ছাড়ছেন ইউক্রেনিয়ানরা

|

প্রাণ ভয়ে যে যেভাবে পারছেন সেভাবেই দেশ ছাড়ছেন ইউক্রেনিয়ানরা

রুশ আগ্রাসনের হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে যে যেভাবে পারছেন ইউক্রেন ছেড়ে পালাচ্ছেন ইউক্রেনের নাগরিক। এরই মধ্যে সীমান্ত খুলে দিয়েছে প্রতিবেশী রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়াসহ পশ্চিমা বেশ কয়েকটি প্রতিবেশী দেশ। জাতিসংঘ বলছে, গেলো ৪৮ ঘণ্টায় ইউক্রেন ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। শরণার্থীদের জন্য হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা পোল্যান্ড রেখেছে বলে জানা গেছে।

বোমা আতঙ্কে প্রিয় জন্মভূমি ছেড়ে যেতে হচ্ছে বলে কোনো সান্ত্বনাতেই আটকানো যায়নি মারিকা সিপোসের চোখের পানি। দেশ ছাড়ার আগ মুহূর্তে চোখ ভরা জল নিয়ে তিনি বললেন, কতো বছরের স্মৃতি, ঘরবাড়ি সবকিছু ফেলে আসতে হয়েছে। আমি বোঝাতে পারবো না ভেতরটা কেমন হাহাকার করছে। এই বয়সে এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে কখনও ভাবিনি।

তার মতো হাজার হাজার মানুষ প্রাণ বাঁচাতে নিজভূমি ছেড়ে আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন প্রতিবেশী দেশগুলোতে। এরইমধ্যে ইউক্রেন থেকে আগত শরণার্থীদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছে প্রতিবেশী পোল্যান্ড, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া ও মলদোভা।

ভিটালি কোভাল নামের এক ইউক্রেনিয়ান শরণার্থী বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই যুদ্ধের আশঙ্কায় ছিলাম আমরা। চূড়ান্ত হামলার পর তাই আর ঘরে থাকতে পারিনি। প্রাণ বাঁচাতে স্বজনদের নিয়ে পালিয়ে এসেছি। এখনও জানি না কোথায় নিরাপদ আশ্রয় পাবো, ভাগ্যে কি অপেক্ষা করছে সেটাও অনিশ্চিত।

শরণার্থীদের প্রসঙ্গে পোল্যান্ডের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মারুইজ কামিনিস্ক বলেন, শরণার্থীদের আশ্রয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি, যেকোনো দেশের নাগরিকের জন্য খুবই নিরাপদ পোল্যান্ড। সবকিছু দিয়েই আমরা ইউক্রেনের পাশে থাকবো, সহায়তা দিয়ে যাবো। আমাদের সীমান্ত রক্ষীরাও সবার নিরাপত্তায় কাজ করছেন।

এদিকে, অনেক ইউক্রেনিয়ান যেমন দেশ ছেড়েছেন তেমনি দেশের হয়ে লড়তে ফিরেছেনও কেউ কেউ। তবে ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী নাগরিকদের দেশ ছাড়তে নিষেধ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে আসা এক ইউক্রেনিয়ান বলেন, জন্মসূত্রে আমার বাবা পোল্যান্ডের নাগরিক, আমরাও সেখানেই ছিলাম। তবে যুদ্ধের কথা শুনে ফিরে যাচ্ছি। আমার মা এবং বোন এখনও কিয়েভে, আর আমি দেশের জন্য লড়াই করেই বেঁচে থাকতে চাই।

প্রসঙ্গত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিয়েভকে এখনও কোনো ধরনের সহায়তা না করলেও, প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নেয়াদের জন্য সহায়তা পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছে জার্মানি।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply