যুদ্ধে বাঁচবেন কি মারা যাবেন তার নিশ্চয়তা নেই। তাই সঙ্গীকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে যুদ্ধের ময়দানে চারপাশে ট্যাংক-গোলাবারুদ আর অস্ত্রের ঝনঝনানির মধ্যেই গাঁটছড়া বাঁধলেন ইউক্রেনের দুই যোদ্ধা। রয়টার্সের খবর জানায়, ফ্রন্টলাইনে ছোট্ট পরিসরেই তারা সারেন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। সহযোদ্ধাদের সেই আয়োজনে যোগ দেন কিয়েভের মেয়র।
পরস্পরকে ভালোবাসতেন ২০ বছর। কিন্তু সারা হয়নি জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ে। যুদ্ধের দামামা বাজার পরই দুজন গেলেন দুই ফ্রন্টলাইনে। বুক চিতিয়ে নেমেছেন দেশরক্ষায়। কাজের স্বার্থে একত্রিত হওয়ার পরই সহযোদ্ধাদের আয়োজনে করলেন আংটি বদল।
কনে আঞ্চলিক প্রতিরোধ ইউনিটের সদস্য লেইসা ইভাশেঙ্কো বলেন, সবচেয়ে বড় কথা আমরা এখনও জীবিত। যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবার স্বামীকে দেখতে পেলাম। দু’জন পৃথক ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ করছি। তাই কোনো আনুষ্ঠানিকতার জন্য অপেক্ষা করিনি। হয়তো পরিবারের আশীর্বাদ পাচ্ছি না। কিন্তু আমাদের সহযোদ্ধারাই এখন বড় পরিবার। বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম। জানালেন, সবকিছুর বিনিময়ে হলেও চান স্বাধীন একটি রাষ্ট্র।
বর ভ্যালেরি ফিলিমোনোভ, যিনি নিজেও আঞ্চলিক প্রতিরোধ ইউনিটের সদস্য, জানালেন, চলমান যুদ্ধে মৃত্যু অবধারিত। আর সংঘাতের কারণে হয়তো সংসারও করা হবে না। কিন্তু তাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, সেটি রক্ষায় বিয়ের এই আনুষ্ঠানিকতা। মৃত্যুকালে অন্তত জানবো, সে আমার স্ত্রী হয়েছিল।
সাদামাটা আয়োজনে একমাত্র অতিথি কিয়েভের মেয়র। আর জনপ্রিয় বক্সার ওয়ালদিমির। খালি হাতেই তারা নবদম্পতিকে করলেন আশীর্বাদ। প্রার্থনায় চাইলেন, তাদের হাতেই আসুক কাঙ্খিত স্বাধীনতা।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিৎস্কো বললেন, নবদম্পতির জন্য উপহার আনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রত্যেক ইউক্রেনবাসীর জন্য এখন বড় চাওয়া যুদ্ধের ইতি। সবার একটাই লক্ষ্য, রুশ আগ্রাসনের সমাপ্তি। বেসামরিক নাগরিক, নারী-শিশুদের হত্যা ঠেকাতে যুদ্ধ করছেন সাহসী ইউক্রেনবাসী। আমরা স্বাধীন হবোই।
প্রসঙ্গত, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের ভূখণ্ডে অভিযান শুরু করে রুশ সেনাবহর। প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাধারণ মানুষকে যুদ্ধ করার আহ্বান জানান খোদ প্রেসিডেন্ট। তার ডাকে সাড়া দিয়েই দাফদরিক কাজ ছেড়ে অনেকেই যোগ দেন যুদ্ধের ময়দানে।
/এডব্লিউ
Leave a reply