রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে ‌লেনদেন সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করলো রুশ ব্যাংক

|

ফাইল ছবি

পশ্চিমাদের নানা নিষেধাজ্ঞায় পড়ার পর এবার রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে আর্থিক লেনদেন সাময়িক বন্ধ করলো দ্য ব্যাংক ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ফরেন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স অব রাশিয়া (ভিইবি)। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, সম্প্রতি ভিইবি বাংলাদেশ ব্যাংককে লেনদেন স্থগিত রাখা সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে, যেখানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পেমেন্ট বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়েছে।‌

গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর দেশটির সাত ব্যাংকের ওপর আন্তর্জাতিক লেনদেনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ। এ তালিকায় ভিইবির নামও রয়েছে। এই ব্যাংকটির সাথেই প্রকল্পের টাকা লেনদেন করে বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আপাতত সুইফট কোড পাঠিয়ে লেনদেন না করার পরামর্শ দেয় রাশিয়া। যদিও আগামী ১২ মার্চ থেকে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের দেয়া সুইফট নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

বুধবার (২ মার্চ) সুইফট তার সদস্য ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো এক বার্তায় জানায়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা রাশিয়ার ৭ ব্যাংক ছাড়াও আরও কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এ স্থগিতের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। সুইফট থেকে বাদ পড়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ভিটিবি ব্যাংক, ব্যাংক অতক্রিতিয়ে, নোভিকম ব্যাংক, প্রমসিয়াজ ব্যাংক, ব্যাংক রোশিয়া, সভকম ব্যাংক ও ভিইবি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম জানান, রাশিয়ার যেসব ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে, সে সমস্ত ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেনের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এ নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কেবল রূপপুর নয়, সমগ্র জ্বালানি খাতেই পড়তে পারে।

বিষয়টি যে উদ্বেগের সেটি স্বীকার করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এর প্রভাব সামগ্রিক অর্থনীতিতে পড়তে পারে। এমন অবস্থায় করণীয় ঠিক করতে সংশ্লিষ্টদের সাথে বৈঠক করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আপাতত রূপপুর প্রকল্পে অর্থায়নের সমস্যা হচ্ছে না। তবে যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদী হলে যে বিপদ বাড়বে, সে কথাও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, রূপপুরে প্রকল্পে ১২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার অর্থায়ন করবে ২২ হাজার ৫৩ কোটি টাকা এবং রাশিয়ার ঋণসহায়তার পরিমাণ ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রাশিয়ার সংস্থা রোসাটম। দেশের প্রথম এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে উৎপাদন হওয়ার কথা রয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply