আস্থাহীনতায় ভুগছে ইসি, ফিরিয়ে আনাই বড় চ্যালেঞ্জ: সংলাপে বিশিষ্টজনেরা

|

মঙ্গলবার (২২ মার্চ) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপে অংশ নিয়ে দেশের বিশিষ্টজনেরা জানান, আস্থাহীনতায় ভুগছে ইসি। যা ফিরিয়ে আনা বড় চ্যালেঞ্জ। ব্যর্থ হলে পদত্যাগের পরামর্শ দেন কেউ কেউ। অন্যদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, গণতন্ত্রকে সুসংহত ও মানুষকে নির্বাচনমুখী করতে চায় ইসি। বিশিষ্টজনদের পরামর্শ নিয়ে পর্যালোচনা করবেন বলেও জানান তিনি।

বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর বিশিষ্টজনদের সঙ্গে ইসির দ্বিতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয় মঙ্গলবার। এদিনও কমিশনের আহ্বানে সাড়া দেননি আমন্ত্রিতদের অর্ধেক। ৩৯ জনের মধ্যে অংশ নিয়েছেন ১৯ বিশিষ্টজন।

মঙ্গলবার সংলাপে অংশ নিয়ে সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান বলেন, বিবেক দিয়ে যদি কাজ করতে পারেন, করেন প্লিজ। বিবেক ও আত্মার ডাকে সাড়া দিয়ে একটু কাজ করেন। আপনাদের পাওয়ার কিছু নেই।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, উনারা যদি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে না পারেন, তাহলে পদত্যাগ করবেন। মনে হয়েছে, উনারা আমাদের কথা সিরিয়াসলি নিয়েছেন।

এ সংলাপে অংশ নেয়া বেশিরভাগ বিশিষ্টজন পক্ষপাতহীন নির্বাচনকালীন সরকারের পক্ষে মত দিয়েছেন। না হলে গ্রহণযোগ্য ভোটের আয়োজন কঠিন বলে মনে করছেন তারা। কমিশনের করণীয় না থাকলেও বারবার নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গ ছিল বিশিষ্টজনদের আলোচনায়। কাগজে-কলমে স্বাধীন হলেও বাস্তবে ইসি প্রভাবমুক্ত নয় বলে মন্তব্য তাদের।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সংবিধান, আইন ও প্রবিধানে যথেষ্ট ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সে ক্ষমতা প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে যে সীমাবদ্ধতা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আমরা দেখেছি, তাতে নির্বাচনকালীন সরকারের চরিত্রটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ইসি নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারে সেটি প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে, যা গত দুইটা নির্বাচনে দেখা গেছে; এমন মন্তব্য করেছেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নিবার্হী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, বর্তমানে নির্বাচনকালীন সরকারের যে চিত্র, তা বহাল রেখে কার্যকর একটি নির্বাচন কমিশন যদি এককভাবে কাজ করে তাতেও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করা কঠিন।

এছাড়া, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করার পক্ষে মত দিয়েছেন বেশিরভাগেই। তাদের যুক্তি ইভিএম ব্যবহারে মতৈক্য নেই।

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন এ কমিশন দায়িত্ব নেয়ার ১৫ দিনের মাথায় গত ১৩ মার্চ শিক্ষাবিদদের সঙ্গে প্রথম সংলাপ করে। সেদিন ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও সংলাপে এসেছিলেন ১৩ শিক্ষাবিদ। এরপর মঙ্গলবার বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বসে ইসি। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে নিজেদের কর্মপন্থা ঠিক করবে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এর আগে নির্বাচন প্রসঙ্গে মতামত নিয়েছিল কাজী রকিব ও নুরুল হুদা কমিশন।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply