ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরে মারপিট, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেয়ার অভিযোগে ওসিসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে আদালতে। রোববার জেলার ছয় নম্বর আমলি আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ঠেনঠেনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. তকি মোল্লার ছেলে মো. মুরাদ মোল্লা (৪৬)। মুরাদ মোল্লা গট্টি ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন, সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান ও ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হান্নান।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ইব্রাহিম হোসেন জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ফরিদপুর পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া অভিযোগটি বিভাগীয় তদন্ত করে দেখার জন্য ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) এবং ফরিদপুরের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৮ এপ্রিল।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মুরাদ মোল্লা গট্টি ইউনিয়নের তিন বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য। ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনের আগে সালথা ওসি তার নিকট বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অংকের টাকা দাবি করেন। তার দাবিকৃত টাকা না দিলে তাকে নির্বাচন করতে দিবে না বলে ভয়ভীতি দেখায়। তিনি (মুরাদ) বাধ্য হয়ে ওসিকে ৭৫ হাজার টাকা দেন। পরবর্তীতে ওসি তার কাছে বিভিন্ন সময় আরও এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি (মুরাদ) চাঁদার দাবিকৃত টাকা পূরণ না করায় আক্রোশে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পরেও তাকে ৩টি মিথ্যা মামলায় আসামি করে ওসি। মুরাদের পায়ে রড লাগানো, তিনি ক্র্যাচ ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না।
এর আগে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সালথায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে মুরাদ ও তার সমর্থকরা। অপরদিকে মানববন্ধন ও মামলার খবর বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে রোববার বিকেলে সালথা থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ওসি মো. আশিকুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে ওসি জানান, সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন। সালথা একটি দাঙ্গা প্রবণ এলাকা। দাঙ্গা করার প্রস্তুতি নেয়ার সময় দেশীয় অস্ত্রসহ মুরাদ মোল্যার ভাই জিহাদসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়।
মামলার বিষয়ে ফরিদপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, আদালতের নির্দেশ আমার এখনও পাইনি। আদালতের নির্দেশ পেলে এ ব্যাপারে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় জেলা পুলিশ ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। দোষী প্রমাণিত হলে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরাধ করলে কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
ইউএইচ/
Leave a reply