ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় নিয়ামক হয়ে উঠেছে মুসলিমরা

|

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অন্যতম নিয়ামক মুসলিমরা। বিশাল এ ভোটব্যাংক নিজের পক্ষে টানতে চাইছেন দুই প্রার্থীই। গেলো পাঁচ বছর মুসলিম সংখ্যালঘুদের চাপে রাখলেও ভোট পেতে সুর নরম করলেন ইমান্যুয়েল ম্যাকরন। তবে ভোট চাইলেও সুর পরিবর্তন করেননি মেরি ল্যু পেন। আগামী ২৪ এপ্রিল রান অফ বা দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ক্ষমতায় বসলে ফ্রান্সে হিজাব নিষিদ্ধ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, ফ্রান্সের মোট জনগোষ্ঠীর ৮ দশমিক ৩ শতাংশ মুসলিম। সন্ত্রাসবাদ দমনের অজুহাতে গেলো পাঁচ বছরে সংখ্যালঘুদের নিয়ন্ত্রণে একগুচ্ছ আইন পাস করেছিল ম্যাকরন সরকার। অথচ, নির্বাচনের আগ মুহূর্তে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাকরন। এখন মুসলিমদের কাছেই ধরনা দিচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারণায় ম্যাকরন বলেছেন, ফ্রান্সের লাখ লাখ মানুষের ধর্ম ইসলাম। তাদের শান্তি রক্ষাও একজন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব। পর্দা নিয়ে আমার ব্যক্তিগত আক্রোশ নেই। তিনি আরও বলেন, চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে নয় বরং স্বেচ্ছায় নারীদের পোশাক পছন্দ করতে দেয়া উচিত।

কট্টর ডানপন্থী প্রার্থী মেরি ল্যু পেন অবশ্য নিজ অবস্থানে অনঢ়। সাফ জানিয়েছেন, ক্ষমতা বসেই ফ্রান্সে নিষিদ্ধ করবেন হিজাব। কারণ এটি ইসলামপন্থীদের চাপিয়ে দেয়া নীতি। তিনি বলেন, আধিপত্যবাদের অন্যতম চিহ্ন হিজাব। ফ্রান্সের প্রত্যেক মুসলিম নারীকে বন্ধন থেকে মুক্ত করতে চাই। ইসলামপন্থীদের চাপে থাকা দেশগুলোর অবস্থা দেখছি। সেখানে নারীদের বোরকা-নেকাব পরতে বাধ্য করা হয়।

২৪ তারিখ দ্বিতীয় দফায় চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামবেন ম্যাকরন ও ল্যু পেন। এক প্রার্থী মুসলিমদের কোণঠাসা করেছিলেন, অন্যজন প্রস্তুতি নিচ্ছেন খড়গহস্ত হওয়ার। কাকে বেছে নেবে ফরাসি সংখ্যালঘুরা? দুজনের কারো প্রতিউ আস্থাশীল মনে হলো বেশিরভাগকে। এক মুসলিম ফরাসি সিরাজাদে রুবিয়াহ্ বলছেন, গত ৫ বছরে মুসলিমদের নানাভাবে চাপে রেখেছেন ম্যাকরন। হঠাৎই মুসলিম অধিকারের ব্যাপারে তিনি সোচ্চার। এমনকি হিজাব ইস্যুতেও কথা ঘুরাচ্ছেন। কারণ মেরি ল্যু পেন পোশাকটি নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন।

স্থানীয় মসজিদ ভিরোকব্যানের রেক্টর আজ্জেদীন গাজী মনে করছেন, কট্টর ডানপন্থিদের ক্ষমতায় আনার অর্থ বিদ্বেষ, বিভাজন এবং মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন বৃদ্ধি। সন্দেহ নেই ম্যাকরনের শাসনামলে আমরা কঠিন সময় পার করেছি। তবে ল্যু পেনের চিন্তাভাবনা আরও ভয়াবহ বলেও মন্তব্য করেন।

২০০৪ সালে স্কুলে হেডস্কার্ফ পরিধান নিষিদ্ধ করে ফ্রান্স। ছয় বছর পর জনসমক্ষে নিষিদ্ধ হয় মুখঢাকা নিকাব। গেলো বছরই ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের প্রকাশ্যে হিজাব পরার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে ফরাসি সরকার।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply