চিঠি দিয়ে আইন লঙ্ঘন করেছে নির্বাচন কমিশন: বাহাউদ্দিন বাহার

|

চিঠি দিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইন লঙ্ঘন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন কুমিল্লার সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। বুধবার (১৫ জুন) সোয়া ১১টার দিকে ভোটপ্রদান শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এদিন নগরীর ভিক্টোরিয়া কলেজ রোডের ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুলে ভোট দেন তিন। ভোট দেয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, ভোটের পরিবেশ আমার দেখার সুযোগ কম হয়েছে। আমি ঘর থেকে বের হয়ে এখন ভোটকেন্দ্রে আসলাম। আমি এখন পর্যন্ত যা দেখলাম, শব্দটা ছিল উৎসবমুখর। শান্তির কুমিল্লায় সুন্দর পরিবেশে ভোট হচ্ছে। সকালবেলা একটু বৃষ্টি হয়েছে। ভোটাররা একটু হতাশ হয়েছিল, কীভাবে ভোট দেবে এ নিয়ে। আমার মনে হয়, বৃষ্টি চলে যাওয়ার পর উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দিচ্ছে তারা।

প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে অভিযোগও তোলেন এ সংসদ সদস্য। বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বলতে চাই, অতি উৎসাহী কোনো কর্মকর্তা যেন পরিবেশ নষ্ট না করে। আমি সকল কর্মকর্তাদের বলব, আপনারা একটা নির্বাচনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সহযোগিতা করেন।

এ সময় ইসির দেয়া চিঠির প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন বাহাউদ্দিন বাহার। আরও বলেন, আইনে আছে, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাভোগী কোনো ব্যক্তি নির্বাচনের পক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আমি সরকারের অংশ নয়। আমি জাতীয় সংসদ সদস্য। আমাকে এ আইনের আওতায় আটকে রেখে ঘরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি চেয়ছিলাম, আমাদের প্রিয় নেত্রী যেমন চায়, একটি সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন। আমিও সেটি চাই, আমার এ কুমিল্লায়।

ইসির দেয়া এ চিঠি নির্বাচনে তাকে এগিয়ে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। বাহার বলেন, যে কাজটা আমি করতাম, চিঠি দেয়ার কারণে কুমিল্লার মানুষ আজকে নৌকার পক্ষে ভোট দিয়েছে। এ চিঠিটা যদি আমাকে না দিতো কুমিল্লার মানুষ এতোটা বিক্ষুব্ধ হতো না।

অবশ্য ইসিকে ধন্যবাদও জানান তিনি। বললেন, তারা আমার কাজটাকে সহজ করে দিয়েছেন। আইন তো সবার জন্য সমান। আমার মনে হয়, নির্বাচন কমিশনকে সবার আগে আইন মানতে হবে। একজন জাতীয় সংসদ সদস্যকে এভাবে নির্দেশ শব্দ ব্যবহার করতে পারেন না। চিঠিটা অসমাপ্ত। চিঠিতে আইনের পুরো ব্যাখা নেই। আইনটা নিয়ে সংসদে কথা বলতে হবে। আইনটা আমরা সংশোধন করবো ইনশআল্লাহ। আইনটা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেছি। একটা রুলও পেয়েছি। এজন্য বলি এ আইনটা পরিবর্তন হবে। একজন সংসদ সদস্য তো সরকারের অংশ না। তাহলে আমার তো সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ৭ জুন কুমিল্লা সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ করেন সাবেক মেয়র ও টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বাহাউদ্দিন বাহারকে সেসময় এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেয় ইসি।

উল্লেখ্য, এই সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২, পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬।

এ নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন নির্বাচন করলেও মূলত আলোচনায় আছেন তিনজন। মনিরুল হক সাক্কু, আরফানুল হক রিফাত ও নিজাম উদ্দিন কায়সার।

এদিকে, সাধারণ কাউন্সিলর পদে লড়াই করছেন ১১১ জন। আর ৩৬ নারী অংশ নিয়েছেন সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে।

উল্লেখ্য, কুসিকে এটি তৃতীয় নির্বাচন। এর আগে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ সিটির দ্বিতীয় নির্বাচন হয় ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ। আগের দুই নির্বাচনেই মেয়র নির্বাচিত হন মনিরুল হক সাক্কু। প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং দ্বিতীয়বার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply