কোন পথে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা?

|

শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা এলেই কেবল অর্থনৈতিক সংস্কার সম্ভব, দাবি বিশেষজ্ঞদের।

কোন পথে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা? প্রতি মুহূর্তেই পাল্টাচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্রটির রাজনৈতিক দৃশ্যপট। নিত্যনতুন চমকের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারছেন না সাধারণ লঙ্কানরাই। রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা এলে অর্থনৈতিক সংস্কার আনা সম্ভব, এমনটা দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে শান্তি প্রক্রিয়া পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছে জাতিসংঘ।

নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সঙ্কটের জেরে সৃষ্ট উত্তেজনায় শান্ত হচ্ছেই না শান্তিপ্রিয় শ্রীলঙ্কা। চলতি মাসের শুরু থেকেই বিক্ষোভ-সহিংসতায় উত্তাল এই দ্বীপরাষ্ট্র। দ্রুতই নতুন নতুন মোড় নিচ্ছে পরিস্থিতি; রাজনৈতিক দৃশ্যপটে আসছে নজরকাড়া পরিবর্তন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে থামবে এই অস্থিরতা, তা নিয়ে রয়ে গেছে বড় প্রশ্ন

দেশটির বিশেষজ্ঞ মহল বলছে, নেতৃত্বে পরিবর্তন এলেই রাতারাতি উন্নয়ন ঘটবে না দেশটির টালমাটাল অর্থনীতির। বরং, রাজনৈতিক স্থিতাবস্থার ওপর নির্ভর করছে বৈদেশিক সহায়তা। শ্রীলঙ্কার জাতীয় শান্তি পরিষদের নির্বাহী পরিচালক জিহান পেরেরা বলেন, শ্রীলঙ্কায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। রাজাপাকসে পরিবারের পতন ঘটায় নতুন নেতৃত্ব হাল ধরবে, এমনটাই প্রত্যাশা। তবে, সাংবিধানিক নিয়মানুসারে তাদের মতাদর্শের লোকজনের হাতেই যেতে পারে ক্ষমতা, এমন সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া, সর্বদলীয় সরকারকে কতোটা গ্রহণ করবে সাধারণ লংকানরা; সেটি নিয়েও প্রশ্ন থাকছে।

ইউএনপি’র মুখপাত্র রুয়ান বিজয়বর্ধনে বলেন, ঘরবাড়ি পোড়ানো, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসের মাধ্যমে কোনো সমাধান আসবে না। দেশের অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক উন্নয়নেও এটি সাহায্য করবে না। শুধু রাজনৈতিক দলগুলোকে মেরুকরণ করা হবে; মানুষে-মানুষে বাড়বে ভেদাভেদ। তাছাড়া, দেশে অস্থিরতা বিরাজ করলে আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাংকের মতো দাতাগোষ্ঠীগুলোও এগুবে না।

প্রতিবেশী দেশগুলোর পাশাপাশি জাতিসংঘও দিয়েছে সংলাপে বসার তাগিদ। জানিয়েছে, প্রয়োজনে মধ্যস্থতা করবে তারা। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, শ্রীলঙ্কায় বিবদমান পক্ষগুলোকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন মহাসচিব। নির্ভেজাল ক্ষমতা হস্তান্তর এবং অর্থনীতির টেকসই সমাধানের জন্যেই সংলাপ জরুরি। সহিংসতার ঘটনায় তিনি উদ্বিগ্ন। অপরাধীদের জবাবদিহিতার মুখোমুখি করারও দাবি তুলেছেন। শান্তি স্থাপনে শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত জাতিসংঘ।

৭০ বছরের ইতিহাসে এত বড় অর্থনৈতিক সংকটে কখনোই পড়েনি শ্রীলঙ্কা। যার ফলে, এতদিন বহির্বিশ্বের সামনেও আসেনি রাজাপাকসে পরিবারের একচ্ছত্র আধিপত্য। তবে লঙ্কানরাই এবার ছিঁড়ে ফেললো পরিবারতন্ত্রের মুখোশ। দেশ ছাড়তে বাধ্য হলো মসনদ আঁকড়ে থাকা রাজাপাকসে পরিবারের প্রত্যেক সদস্য।

আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কান প্রধানমন্ত্রীর অফিস দখল, সেনাবাহিনী নামাচ্ছেন নতুন প্রেসিডেন্ট

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply