পুঁজিবাজারে অস্থিরতা: ‘অর্থনৈতিক সংকটের সুযোগ নিচ্ছে সিন্ডিকেট’

|

চরম অস্থিরতা চলছে দেশের পুঁজিবাজারে। আতঙ্কিত সাধারণ বিনিয়োগকারীরা; বেড়েছে বিক্রির চাপও। একটি সিন্ডিকেট এই অর্থনৈতিক সংকটের সুযোগ নিচ্ছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে ২ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার এবং ফোর্স সেলের কারণে পতন ত্বরান্বিত হচ্ছে।

মন্দাভাব বিরাজ করছে দেশের পুঁজিবাজারে। অর্থনৈতিক কিছু সূচকের নেতিবাচক প্রভাবে সেই সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। ঈদের পর থেকেই চলছে টানা দরপতন। সূচক কমেছে ৩শ’ পয়েন্টের বেশি। আর ১৩ মাস পর আবারও ৬ হাজার পয়েন্টের নীচে নেমেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ডিএসই এক্স সূচক। সেই সাথে, লেনদেনও নেমে এসেছে তলানিতে। দাম কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ক্রেতার অভাবে শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা জানান, দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড বলা হয় যে পুঁজিবাজারকে, সেই বাজারই এখন সবচেয়ে অবহেলিত। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতির সুযোগে আখের গুছিয়ে নিচ্ছে একটি সিন্ডিকেট।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ার বিক্রি করে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন বড় বিনিয়োগকারীরা। আর প্রতিষ্ঠানগুলো নিষ্ক্রিয় থাকায় কমেছে লেনদেন। মার্জিন ঋণের কারণে ফোর্স সেলের মুখে পড়েছে অনেক শেয়ার; যা দরপতনকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

ডিবিএ’র সহ-সভাপতি সাজেদুল ইসলাম বলেন, প্রত্যেকে নতুন করে বিনিয়োগ করছেন না। আর কিছু কিছু বিনিয়োগকারী আছেন যারা সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য কিছু কিছু শেয়ার বিক্রি করছেন, কিন্তু নতুন করে কিনছেন না। এটাই মূলত শেয়ারবাজারে অস্থিরতার কারণ। ইনস্টিটিউটকে যদি বাজারমুখী করা যায়, তাহলে এই যে দুইদিন পরপর হঠাৎ করে বাজারে একটা আতঙ্ক তৈরি হওয়া, এই জিনিসটা হবে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পুঁজিবাজারে এতটা দরপতন হবার কথা নয়। বরং সংকটকে পুঁজি করে একটি চক্র সুবিধা নিচ্ছে। নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে তারাই বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত করছে। বিষয়টি নিয়ন্ত্রক সংস্থার দেখা উচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, অর্থনৈতিক কারণটিকে আমি খুব বড় করে দেখছি না। বরং একটা সংঘবদ্ধ চক্রের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র তৈরি ও প্রচার করার প্রভাবই বাজারে বেশি পড়েছে। যে বিষয়টি সরকার ইতিবাচকভাবে বলছে, এই চক্রটি তা নেতিবাচকভাবে বলে ভীতির সঞ্চার করেছে। এ কারণেই ধারাবাহিক পতন ঘটেছে।

টানা দরপতনের সময় নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন আছে বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, আতঙ্ক দূর করতে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। ড. মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে খুব বেশি শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের সাপোর্টগুলো মার্কেটে থাকবে। এই মার্কেটকে ভালো রাখার দায়বদ্ধতা সরকারেরও আছে। আর এ ধরনের ঘোষণা সময়ে সময়ে আসা উচিত।

আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার তাগিদ সিপিডি’র

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply