লবণাক্ত পানি ব্যবহারে বাড়ছে জরায়ুর রোগ; ঝুঁকিতে উপকূলের নারীরা

|

নিয়মিত পিরিয়ড বন্ধ করতে নারীরা খাচ্ছেন জন্ম নিয়ন্ত্রক পিল। ভয়াবহ এ তথ্যের পেছনের কারণ মাসিককালীন লবণাক্ত পানি ব্যবহারে আক্রান্ত হতে হয় জরায়ু ও প্রজননজনিত মারাত্নক রোগে। জলবায়ু বদলের এ নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কৈখালী ইউনিয়নে।

বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কৈখালি ইউনিয়নে দেখা দিচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ রূপ। পানিতে লবণের আধিক্যে, সেখানকার নারীদের পানির সাথে সরল সমীকরণ গরল হয়ে গেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাসিকের সময় ব্যবহার করতে হয়, লবনাক্ত পানি পাশাপাশি যে কাপড় ব্যবহার করেন সেখানকার নারীরা সেটিও পরিষ্কার করতে হয় লবণাক্ত পানিতে। ফলে তারা ভুগছেন জরায়ুজনিত নানা জটিলতায়।

এরচেয়েও ভয়াবহ তথ্য হচ্ছে , এসবের ভয়ে উপকূলীয় নারীরা পিরিয়ড বন্ধ করতে নিচ্ছেন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল। স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসকের আশঙ্কা, এভাবে দিনের পর দিন পিল খেলে নিয়মিত মাসিক বন্ধ, বন্ধ্যাত্বসহ জরায়ুর ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হতে পারে নারীরা।

এ প্রসঙ্গে শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফাতেমা ইদ্রিস ইভা বলেন, এমন খবর পেয়েছি যে মেয়েরা তাদের ঋতুস্রাব বন্ধের জন্য পিল খাচ্ছেন। এ কারণে মাসিকের সমস্যাসহ নানাধরনের রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এসব ওষুধ খেলে হরমোনের যে কাজ করার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

লবনাক্ত পানির এ সমস্যা নিরসনে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড শ্যামনগরের ১২টি জায়গায়, প্রাকৃতিকভাবে পানির ব্যবস্থা করেছে। এছাড়াও স্থানীয় কিশোরীদের নিয়ে উঠোন বৈঠকের আয়োজন করে বিনামূল্যে দেয়া হয় ৩ মাসের স্যানিটারি ন্যাপকিন।

এ ব্যাপারে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড হেড অফ অপারেশন্স মালেক মো. সাইদ বলেন, প্রচুর সংখ্যক নারী এই পিলগুলো নিয়মিত খাচ্ছেন। এবং তারা জরায়ুর বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। সেখানে লবণাক্ত পানি একটা সমস্যা, স্যানিটারি প্যাডেরও অভাব ছিল, সচেতনতার অভাব ছিল। আমরা মূলত দুইভাবে প্রবলেমটা হ্যান্ডল করার চেষ্টা করেছি। প্রথমত, তারা যাতে পরিষ্কার পানি ধরে রাখতে পারেন। কিন্তু সামনে তো পানি ধরে রাখা একটা সমস্যা হতে যাচ্ছে।

বর্ষা শেষে এ প্রক্রিয়ায় সমাধান নিয়ে শংকার কথা জানিয়ে তারা বিকল্প পথের চেষ্টা করছেন। তবে সাথে চান সংশিষ্ট সবাইকে।

নারীর মাসিককালিন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নারীর অধিকার। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীদের মাঝে সচেতনতা বাড়িয়ে দ্রুত এ ভয়াবহ সমস্যার সমাধানের দাবি সংশ্লিষ্টদের।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply