আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে চীনের ক্ষমতাসীন দল চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি- সিপিসি’র ঐতিহাসিক কংগ্রেস। পাঁচ বছর পর পর হয় সপ্তাহব্যাপী এ অধিবেশন। এক সপ্তাহের কংগ্রেসে, তুলে ধরা হবে আগামী পাঁচ বছরের দেশ পরিচালনার কর্মপরিকল্পনা। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ক্ষমতাকে আরও মজবুত করাই হবে এবারের কংগ্রেসের মূল লক্ষ্য।
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বসছে রাজনীতিবিদদের মেলা। তিয়েন আন মেন স্কয়ারের গ্রেট হলে রোববার (১৬ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম সম্মেলন। এটিই দেশটির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক আয়োজন। চীনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এতে যোগ দিচ্ছেন ২২৯৬ জন প্রতিনিধি। কোভিড, ইউক্রেন যুদ্ধ, তাইওয়ান ইস্যুসহ নানা সংকটের কারণে এবারের কংগ্রেস পাচ্ছে আলাদা গুরুত্ব। সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশও। তাই ক্ষমতাসীনদের সম্মেলনের গুরুত্ব আছে বিশ্বজুড়েই।
সপ্তাহব্যাপী কংগ্রেসে ঠিক করা হবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশ পরিচালনার রোডম্যাপ। নির্বাচিত হবে ২৫ সদস্যের পলিটব্যুরো ও ৭ সদস্যের স্ট্যান্ডিং কমিটি। এই কংগ্রেস থেকেই নির্ধারণ করা হয় দলের সর্বোচ্চ নেতা।
গত কয়েক দশক ধরে, পার্টির সর্বোচ্চ পদে দুই মেয়াদে থাকার রীতি তৈরি হয়েছিলো। ২০১৮ সালে সে নিয়ম বাতিল করেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শি জিনপিং। এখন তৃতীয় মেয়াদে তো বটেই, ৬৯ বছর বয়সী এ নেতার আমৃত্যু ক্ষমতায় থাকার পথও তৈরি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড্রিও থম্পসন বলছেন, শি জিনপিং নিজেকে এরইমধ্যে চীনের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আর তাই, আমরা তাকে বেশকিছু একক সিদ্ধান্ত নিতে দেখেছি। করোনাকালীন শি অনেক কঠোর নীতি গ্রহণ করেছিলো যা চীনের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া নানাভাবে দলের নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়িয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে চীন বিশেষজ্ঞ জোসেপ তোরিজিয়ান বলেন, এই কংগ্রেসের পরেও পার্টির মৌলিক কোনো পরিবর্তন আসবে বলে আমি মনে করি না। কোনো সিদ্ধান্তের জন্য জিনিপিংকে কংগ্রেস শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। দেশটির অনেকেই মনে করে, চীন যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তা সমাধানের জন্য জিনপিংয়ের এ বিপুল ক্ষমতার প্রয়োজন আছে।
এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, মাও সেতুংয়ের পর চীনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা জিনপিংয়ের তৃতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনায় অগ্রাধিকার ঠিক করাই এবারের কংগ্রেসের মূল এজেন্ডা। দেশের স্বনির্ভরতা, নিরাপত্তা ও তাইওয়ানের ওপর চাপ বাড়ানোর ইস্যুতেই থাকবে গুরুত্ব।
প্রসঙ্গত, ১৯২১ সালের ২৩ জুলাই চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৭ সালে, সবশেষ কংগ্রেসের উদ্বোধনী দিনে সাড়ে তিন ঘণ্টার বক্তব্য দেন জিনপিং। সেবার ২০৫০ সালের মধ্যে শীর্ষ পরাশক্তি হওয়ার লক্ষ্য তুলে ধরেন এ প্রভাবশালী নেতা।
/এসএইচ
Leave a reply