ইহুদি মন্ত্রীর আল আকসা সফর ইস্যুতে জাতিসংঘে মুসলিম বিশ্বের ক্ষোভ

|

জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি রিয়াদ মনসুর।

আল-আকসা ইস্যুতে শান্ত হচ্ছে না মুসলিম বিশ্বের ক্ষোভ। বিষয়টির ফয়সালা করতে বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) জরুরি এক বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। বৈঠকে ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি সাফ জানিয়েছেন, গালভরা বিবৃতিতে সন্তুষ্ট হবে না মুসলিম সম্প্রদায়, তারা চায় কার্যকরী মীমাংসা। এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি- বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে মাথানত করবে না ইহুদিরা। এরজন্য, জাতীয় নীতিমালা এবং পররাষ্ট্র সম্পর্কেও আনা হবে সংস্কার। খবর রয়টার্সের।

পুরো বিশ্বের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ইসরায়েলি কট্টর ডানপন্থি মন্ত্রী, ইতেমার বেন গাভির। তার আল আকসা সফর ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের বিবাদকে দিয়েছে নতুন এক মাত্রা। যা, অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ছাড়িয়ে প্রভাব বিস্তার করেছে বিশ্বমঞ্চেও। এরই ধারাবাহিকতায়, জাতিসংঘের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে ওআইসি, ন্যাম-ভুক্ত দেশগুলো। ফিলিস্তিনও সাফ জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদের গালভরা বিবৃতি আর শুনতে চায় না তারা।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি রিয়াদ মনসুর এ প্রসঙ্গে বলেন, জেরুজালেমের ওপর আঘাত প্রতিরোধ এবং এ অঞ্চলের স্থিতাবস্থা রক্ষার বিষয়টি নির্ধারণ করবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ইহুদি মন্ত্রীর সফর আল আকসা মসজিদ এবং হারাম আল শরিফের পবিত্রতা নষ্ট করেছে। শুধু তাই নয়, খ্রিস্টানদের সমাধিস্থলেও হামলা চালিয়েছে উগ্রপন্থীরা। যা, পুরো জেরুজালেমে ছড়িয়েছে ঘৃণা ও ক্ষোভ। এর বিরুদ্ধে গোটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ তোলা উচিত। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের গালভরা বিবৃতিতে এবার সন্তুষ্ট হবো না আমরা। চাই কার্যকরী মীমাংসা।

যুক্তরাষ্ট্রের পর জার্মানিও স্পষ্ট করেছে নিজ অবস্থান। জানিয়েছে- পবিত্র শহর জেরুজালেমে অস্থিরতা ছড়ানোকে কোনোভাবেই মেনে নিবে না তারা।

জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্রিস্টোফার বার্গার এক বিবৃতিতে বলেন, জেরুজালেমের পবিত্র স্থাপনায় অস্থিরতা ছড়ানোর উদ্দেশে নেয়া একতরফা পদক্ষেপকে কোনোভাবেই সমর্থন জানাবে না জার্মানি। ইহুদি মন্ত্রীর সফর স্পষ্টভাবে উসকানিমূলক আচরণ। আশা করছি, ইসরায়েলের নতুন সরকার এ ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। জবাবদিহিতার মুখোমুখি করা উচিত মন্ত্রিসভার ঐ সদস্যকে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর হতে দেবেন না বলে আশা করছি।

অবশ্য, ঘরে-বাইরে নিন্দা-সমালোচনার মুখেও অনঢ় ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অধিকার আদায় এবং সারাবিশ্বে ইহুদিদের অবস্থান পাকাপোক্ত করবে দেশটির নতুন সরকার।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমাদের নতুন সরকারের মূল উদ্দেশ্যেই হলো- বিশ্বে ইহুদিদের অস্তিত্ব পাকাপোক্ত করা। বেহাত হওয়া ইসরায়েলি ভূখণ্ড উদ্ধার এবং সেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। সেজন্য যদি জাতীয় নীতিমালায় পরিবর্তন-সংস্কার আনতে হয়, তারজন্যও আমরা প্রস্তুত আছি। আইন লঙ্ঘনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে। পররাষ্ট্র সম্পর্কও পুনর্বিবেচনা করা হবে। কারণ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে মাথানত করবে না ইসরায়েল; বরং বিশ্বকেই মানতে হবে আমাদের কথা।

প্রসঙ্গত, নতুন বছরের প্রথম চারদিনে পশ্চিম তীরে অভিযান চালিয়ে ৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনাবহর। যাদের মাঝে রয়েছে নিরাপরাধ শিশুও। ইহুদি প্রশাসনের সাফাই, সেনাহত্যার সাথে জড়িতদের সন্ধানেই চালানো হচ্ছে তল্লাশি।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply