খুলনায় বিদেশি নানা জাতের কুকুরের বংশ বিস্তার ও বাণিজ্যিক প্রসারের লক্ষ্যে খুলনা ক্যানেলের স্বপ্ন দেখেছিলেন সাদিকুর রহমান গালিব। দুই বছরের চেষ্টায় তা অনেকটাই বাস্তবে রূপ নিলেও গালিবের আকস্মিক মৃত্যুতে তা থমকে যাওয়ার পথে। প্রজনন খামারে থাকা অর্ধশত কুকুর থেকে মাত্র এক মাসেই বিক্রি করে দেয়া হয়েছে ৩৪টি কুকুর। মনিবকে হারিয়ে কুকুরগুলোও যেনো অনেকটা নিস্প্রাণ হয়ে পড়েছে।
প্রিয় মনিব গালিবের ছায়া দেখতে পেলেই কাছে আসতো জার্মান শেফার্ড, রড রুইলার, পিটবল টিরিয়র, ডোভারম্যানসহ বিভিন্ন জাতের বিদেশি কুকুরগুলো। কুকুরের হাঁকডাকে সবসময় সরগরম থাকতো ‘খুলনা ক্যানেল” নামের ফার্ম হাউজটি। মনিবই ছিলো তাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল। গত ৩০ ডিসেম্বর আকম্মিক মৃত্যু হয় তরুণ উদ্যোক্তা সাদিকুর রহমান গালিবের। মনিবের শূন্যতায় দিশেহারা হয়ে ওঠে প্রভুভক্ত প্রাণীগুলো। থেমে যায় আগের সেই চঞ্চলতা। সারাক্ষণ যেনো এক অদ্ভুত নীরবতা চলছে তাদের মাঝে।
এ প্রসঙ্গে খামারকর্মী সানজিদ মণ্ডল বললেন, ভাই যে জায়গায় চেয়ার নিয়ে বসে থাকতেন কুকুরগুলো ওখানেই বসে থাকে সারাদিন। ওরা খায়দায় কিন্তু বসে গিয়ে ওখানেই।
গালিবের কাছে প্রাণিগুলোর দেখভালটা শিখেছিলেন তার স্ত্রী শারমিন সুলতানা। স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র কন্যাকে নিয়ে খামারেই থাকেন শারমিন।
গালিবের স্ত্রী শারমিন সুলতানা বললেন, ওদের দেখাশোনাটা বলতে খাবারের ব্যাপারটা দেখছি এখন। কিছু কুকুর বিক্রিও করেছি, ওই টাকা দিয়েই আপাতত ওদের খাবারের খরচ চালাচ্ছি।
গালিবের স্মৃতি আকড়ে থাকতে চান শারমিন। বৃদ্ধি করতে চান কুকুরের সংখ্যাও। শারমিন আরও বলেন, আমি এদেরকে নিয়েই থাকবো। ওর (গালিবের) স্মৃতিগুলো নিয়েই থাকতে চাই। যদি কখনও অন্য কোথাও যেতেও হয় তখনও আমি ওদের সাথে নিয়েই যেতে চাই।
বেঁচে থাকা অবস্থায় চার বছরে বিদেশি কুকুর ছানা বেচে গালিব আয় করেছিলেন ১২ লাখ টাকারও বেশি। মাসে তার ব্যয় ছিল প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
/এসএইচ
Leave a reply