প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে তুরস্কের ভবন সুরক্ষা নীতিমালা

|

ছবি: সংগৃহীত

ভূমিকম্পের ভয়াবহতার পর প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে তুরস্কের ভবন সুরক্ষা নীতিমালা। অভিযোগ উঠেছে, ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা হওয়া স্বত্বেও সঠিক বিল্ডিং কোড না মেনেই অঞ্চলগুলোতে তৈরি করা হয়েছিলো বেশিরভাগ ভবন। খবর দ্য গার্ডিয়ান’র।

জোড়া ভূমিকম্পে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে তুরস্কের হাজার হাজার ভবন। সরকারি হিসাবেই এ সংখ্যা প্রায় সাড়ে ছয় হাজার।

ভূমিকম্পে তুরস্কে পুরোনো ভবনের পাশপাশি ধসে পড়েছে অনেক নব-নির্মিত স্থাপনাও। গেলো ১/২ বছরে নির্মিত সুবিশাল অনেক অট্টালিকাও মুহূর্তেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। যদিও নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বরাবরই দাবি করে, ভূমিকম্প সহনশীল প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্মাণ করা হয় ভবনগুলো।

সবশেষ, ২০১৮ সালে তুরস্কে ভবন সুরক্ষা আইন সংশোধন করে আরও কঠোর করা হয়। তবে, দেশটির সরকার নিয়ম নীতি না মেনে নির্মিত স্থাপনাগুলোকে জরিমানার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে আসছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত ১০ প্রদেশের ৭৫ হাজারেরও বেশি অবকাঠামো এই সুযোগ নিয়েছে। অতীতে, তুর্কি সরকারের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করে সতর্কবার্তাও দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান অবশ্য সরকারের পক্ষে সাফাই গাইছেন। তার দাবি, এত শক্তিশালী ভূমিকম্প যেকোনো শহরকেই ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। তুরস্কের ভবন নির্মাণ বিধি অনুযায়ী, অবকাঠামো তৈরিতে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকাগুলোতে শক্তিশালী ইস্পাত ও কংক্রিট ব্যবহার করতে হবে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার দাবি, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল গাজিয়ানটেপের বেশিরভাগ ভবনেই তা মানা হয়নি।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক ডেভিড আলেক্সজেন্ডার বলেন, এই ভূমিকম্প ধ্বংসাত্মক ছিল। তবে, সঠিক নিয়মে নির্মিত ভবনগুলোকে এভাবে গুড়িয়ে দেয়ার মতো শক্তিশালী নয়। সব জায়গায় ভূমিকম্পের মাত্রা একরকম ছিল না। অনেক জায়গায় মাত্রা ছিল সর্বোচ্চের চেয়ে কম। কাজেই বলা যায়, সঠিক নীতিমালা মেনে না বানানোর কারণেই এভাবে হাজার হাজার স্থাপনা ধসে পড়েছে।

তথ্যমতে, তুরস্কের ৫০ শতাংশ ভবনই সঠিক নীতিমালা মেনে তৈরি করা হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে জাপানের মতো তুর্কি সরকারে অবস্থান যদি কঠোর হতো, তবে ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি কমতো প্রাণহানিও।

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply