মার্কিন ড্রোন বিধ্বস্তের ঘটনায় মুখোমুখি অবস্থানে মস্কো-ওয়াশিংটন

|

ছবি: সংগৃহীত

কৃষ্ণসাগরে মার্কিন ড্রোন বিধ্বস্তের ঘটনায় মিথ্যাচার করছে রাশিয়া। আত্মরক্ষা নয় বরং, আগ্রাসন চালিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে রিপার ড্রোন। এমন অভিযোগ করেছে ওয়াশিংটন। তবে রাশিয়ার দাবি, কৃষ্ণসাগরের ওই এলাকায় আগে থেকেই কড়াকড়ি ছিল বিমান চলাচলে। সেই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিডিও ফুটেজেই স্পষ্ট হয়েছে যে, ইচ্ছাকৃতভাবেই মার্কিন ড্রোনে হামলা করেছে রুশ যুদ্ধবিমান।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রুশ সুখোই যুদ্ধবিমানের বেপরোয়া তৎপরতায় এমকিউ-নাইন রিপার ড্রোনটি বিধ্বস্ত হওয়ার একটি ভিডিও প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র। যাতে দেখা যায়, ভাসমান ড্রোনটিকে লক্ষ্য করে উড়ে আসছে রাশিয়ার দুটি সুখোই-টুয়েন্টি সেভেন বিমান। এরপরই তেল ছেটানো শুরু হয় যুদ্ধবিমান থেকে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পরিকল্পিতভাবেই করা হয়েছে এই হামলা।

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডেভিড নটোউইৎজ বলেন, ভিডিওতে রুশ ফাইটার জেটের অবস্থানটা লক্ষ্য করুন। মার্কিন ড্রোনের দিকে এটি যেভাবে এগিয়ে আসছে তাতে স্পষ্ট যে, এটি নিছক দুর্ঘটনা কিংবা মাঝ আকাশে দুই বিমানের মুখোমুখি সংঘর্ষ নয়। রুশ বিমানটি বেশ আগে থেকেই তেল ছেটাতে ছেটাতে এগিয়ে আসছিল। মার্কিন ড্রোনের সাথে ধাক্কা লাগার আগ মুহূর্তে সেটি ওপরের দিকে উঠে যায়। ফলে, এটা স্পষ্টতই আগ্রাসন।

এদিকে, ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের পর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে মস্কো এবং ওয়াশিংটন। রাশিয়া বলছে, কৃষ্ণসাগরের ওই এলাকায় আগে থেকেই বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া ছিল। তা অমান্য করা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। আর ওয়াশিংটন বলছে, এই ইস্যুতে মিথ্যাচার করেছে রাশিয়া।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর থেকেই কৃষ্ণসাগরের ওই অঞ্চলে বিমান চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করেছি আমরা। তাহলে মার্কিন ড্রোন সেখানে গেলো কেন? রুশ আকাশ নীতিমালা লঙ্ঘন করে সেখানে অনুপ্রবেশ কেন করলো মার্কিন ড্রোন? এটা আন্তর্জাতিক আকাশসীমা লঙ্ঘন ছাড়া আর কিছুই নয়।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, এটা যে আগ্রাসন তার স্পষ্ট প্রমাণ তো চোখের সামনেই রয়েছে। সেখানে নিয়মিত টহল দিচ্ছিল আমাদের ড্রোন। এ সময় কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা কিংবা সতর্কতা ছাড়াও হামলা চালানো হয়েছে। আর আকাশসীমা লঙ্ঘনের যে দাবি করা হচ্ছে তা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।

রাশিয়ার দাবি, ৩৬ ফুট দৈর্ঘ্যের মার্কিন ড্রোনটি মিসাইল-বোমা ও বিস্ফোরক বহনে সক্ষম। উড়োযানটির পাখার ব্যাপ্তি ৭২ ফুটের বেশি। তাই নিরাপত্তার খাতিরেই ড্রোনটিকে ধ্বংস করা হয়েছে। ড্রোনটির ধ্বংসাবশেষও তদন্তের জন্য সংগ্রহ করার চেষ্টা চালানো হবে বলে জানায় রাশিয়া। আর এ নিয়েই ক্ষিপ্ত ওয়াশিংটন।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply