দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে চীনা অভিবাসনপ্রত্যাশীর ঢল

|

ছবি : সংগৃহীত

লাতিন কিংবা আফ্রিকান নয়, মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তাদের জন্য এবার নতুন দুশ্চিন্তা চীনা অনুপ্রবেশকারী। হঠাৎ করেই যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে বেড়ে গেছে চীনা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ভিড়। গত ছয় মাসে ওই সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন সাড়ে ৬ হাজারের বেশি চীনা নাগরিক। দুর্গম পথ পাড়ি দেয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নানা কন্টেন্ট দেখে রীতিমতো প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তারা। খবর রয়টার্সের।

লাতিন আমেরিকা থেকে গহীন জঙ্গল-পাহাড়-নদী আর দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে মেক্সিকোর যুক্তরাষ্ট্র সীমান্ত। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধপথে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার দুর্গম রুটটি বেছে নেন অনেক অভিবাসনপ্রত্যাশী। হঠাৎ করে এ পথে খুব বেশি দেখা মিলছে চীনা নাগরিকদের। এমনকি কোলের শিশুকে নিয়েও অনিশ্চিত যাত্রা অনেকের।

গেল ছয় মাসে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি চীনা নাগরিকের অনুপ্রবেশের তথ্য পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সংখ্যাকে রীতিমতো নজিরবিহীন বলছেন দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তা এরিন ফিঞ্চ বলেন, কোভিড মোকাবিলায় কড়াকড়িতে চীনের অনেক মানুষের জীবনেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যে কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল হওয়ার পরও দক্ষিণের সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার পরিকল্পনা করছেন অনেকে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা না পাওয়াও এ পথে আসার বড় কারণ।

মজার বিষয় হলো, কীভাবে অবৈধপথে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা যায়, তা নিয়ে অনেক ভিডিও কন্টেন্ট ভাইরাল হচ্ছে চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। কোন রুট ব্যবহার করতে হবে, কোথায় কত খরচ, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রশ্নের জবাব কী হবে- এসব নিয়ে রীতিমতো পরামর্শ দেয়া হয় এসব কন্টেন্টে।

অবৈধপথে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার জন্য চীনারা মূলত নানা দেশ ঘুরে আগে ইকুয়েডর যাচ্ছে। সেখান থেকে দুর্গম পথের সহযাত্রী হতে, টাকার বিনিময়ে গাইডেরও খোঁজ মিলছে সামাজিক মাধ্যমে।

নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে এক অভিবাসনপ্রত্যাশী বলেন, শুরুতে আমি হুবেই থেকে হংকং গিয়েছি। সেখান থেকে বিমানে থাইল্যান্ড। পরে তুরস্ক হয়ে ইকুয়েডর। সেখান থেকে দক্ষিণ আমেরিকান বনাঞ্চল হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইনজীবী জাওশেং হুয়াং বলেন, অবৈধ এ অনুপ্রবেশকে রীতিমতো একটা সেবা বা পণ্য হিসেবে নেয়া হয়েছে। উন্নত জীবনের আশা তো সবারই আছে। এর পাশাপাশি কঠোর কোভিড নীতির কারণে আয় ও জীবনযাপনে প্রভাব। এ হতাশা থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা বেড়েছে।

করোনা মহামারির আগে চীনা নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ ভিসা আবেদন অনুমোদনের হার ছিল ৯০ শতাংশ। গত দুই বছরে ঠিক উল্টে গেছে এই হার। অথচ অনুপ্রবেশের পর যুক্তরাষ্ট্রে চীনাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন অনুমতি পাওয়ার হার প্রায় ৬০ শতাংশ।

এএআর/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply