দুই মাসেও উদ্ধার হয়নি বিমানের মেইল সার্ভার

|

আব্দুল্লাহ্ তুহিন:

দুই মাস পরও হ্যাকারদের কবল থেকে সার্ভার উদ্ধার করতে পারেনি রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা। নানা চেষ্টা করেও কোনো কূল-কিনারা করতে পারছেন না তারা। এরইমধ্যে বার্ষিক প্রতিবেদন ও বেতন ভাতা পরিশোধে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। বিষয়টিতে উদ্বেগ জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি রাষ্ট্রীয় সংস্থার জন্য চরম ব্যর্থতা।

বাংলাদেশ বিমানের দেশি বিদেশি যোগাযোগের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মেইল সার্ভার হ্যাকের খবর জানাজানি হয় গত ১৭ মার্চ। এর আরও আগে র‍্যানসমওয়্যার নামে বিশেষ এক ধরনের ম্যালওয়ার দিয়ে মেইল সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ নেয় হ্যাকাররা। দাবি করে মোটা অঙ্কের টাকা। যার ফলে অনিশ্চয়তায় পড়ে বার্ষিক প্রতিবেদন ও অডিট রিপোর্ট প্রস্তুতের কাজ।

বিমান পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, আমাদের নিজেদের ঘরকে নিজেদের রক্ষা করতে হবে। আমরা যদি সেই জিনিসটা না করতে পারি, আমাদের ঘরকে যদি অন্যের জন্য খুলে দেয় তাহলে স্বাভাবিকভাবে আমার ঘরের মধ্যে জিনিস থাকবে না। সার্ভার হচ্ছে আমাদের নিজস্ব তথ্য ভাণ্ডার। তা আন্যের হাতে তুলে দিতে পারি না।


যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ সরকারি ২৯টি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের তথ্যের সুরক্ষা নিশিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়। এরপরও বিমানের সার্ভার হ্যাক চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা।

সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ আরিফ মঈনুদ্দীন বলেন, র‍্যানসমওয়্যার যখন কোনো সিস্টেম আক্রান্ত হয়, তাহলে সেই সিস্টেমটি যতক্ষণ পর্যন্ত ডিক্রিপশন না হবে বা মুক্তিপণ দিয়ে দেয়া না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সেটি ব্লক অবস্থায় থাকবে। বাংলাদেশ বিমানের ক্ষেত্রেও একই ঘটনাটি ঘটেছে।

চলতি বছর জানুয়ারিতে লন্ডনসহ কয়েকটি স্টেশনে টাকা পাঠানোর জন্য ফেক মেইল পাঠায় হ্যাকাররা। টাকা না পেয়ে ১৮ মার্চ ব্যাপক আকারে সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পরই হ্যাকারদের বিষয়টি জানাজানি হয়। ২ মাস পেরিয়ে গেলেও সার্ভার উদ্ধারতো দূরের কথা, কাদের অবহেলা ছিল তাও প্রকাশ করেনি বিমান।

বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, এটা ঠিক হয়ে যাবে। এটাতো অস্ট্রেলিয়া হয়েছে, ব্রিটেনেও হয়েছে। উদ্ধারে আইসিটি কাজ করছে। আমাদের এক্সপার্টরাও কাজ করছে। এই ক্ষয়ক্ষতি যাতে আর না হয় তার জন্য প্রটেকশন নেয়া হচ্ছে।

বিমানের আর্থিক হিসেব রাখার জন্য সান সিস্টেম এবং বেতন ভাতার জন্য ব্যবহার করা হয় পে রোল সিস্টেম। গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম দুটিই নিয়ন্ত্রণে নেয় হ্যাকাররা।

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম বলেন, যেসমস্ত ইমেইলে সমস্যা ছিল সেগুলোকে আমরা আইসোলেট করেছি। সেগুলো রিকভার করে কাজ চলছে। কোনো অসুবিধা নেই। আমরা ডিজিটাল সিকিউরিটির অথোরিটির সাথে যোগাযোগ রেখে এটা রিকভার করে যাচ্ছি।

লোকসানে জর্জরিত বিমানের অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ ধামাচাপা দিতে এমন ঘটনা ঘটানোর শঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply