ইউরোপের দেশগুলোতে বারবার পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা, সমালোচনা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে মুসলিম দেশগুলো। এরপরও থামছে না এই চর্চা। তবে এবার চাপের মুখে নিজেদের নীতিমালা সংস্কার বা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুইডেন-ডেনমার্ক ও নরওয়ের মতো দেশগুলো। খবর আল জাজিরার।
একমাসের ব্যবধানে মোট তিনবার কোরআন পোড়ানোর মতো ঘটনা ঘটেছে দেশগুলোতে। সবগুলোর অনুমোদনই দিয়েছে সুইডেন বা ডেনমার্ক। এ নিয়ে মুসলিম দেশ থেকে ইস্যুটি নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে, বিভিন্ন দেশ কূটনৈতিক সর্ম্পক ছিন্নের মতো হুমকিও দিয়েছে এরই মধ্যে। এরপরও বারবার এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন- ইউরোপীয় দেশগুলো বরাবরই উদারপন্থী। তাদের কাছে ধর্মীয় বিশ্বাসের তুলনায় বেশি গুরুত্ব পায় বাক স্বাধীনতা। দ্বিমুখী মতাদর্শের কারণেই মূলত এ সংঘাত তৈরি হয়েছে।
এ নিয়ে দি ফিউচার অব ফ্রি স্পিচ এর সিইও জ্যাকব সানগামা বলেন, ডেনমার্ক ও সুইডেন তাদের ব্ল্যাসফেমি আইন বিলোপ করেছে। যার অর্থ দাঁড়ায়, ধর্ম নিয়ে কৌতুক-বিদ্রুপ বা সমালোচনায় কোনো বাধা নেই ইউরোপের দেশগুলোয়। একে রাজনীতি এবং সংস্কৃতির একটা অংশই ভাবা হয়। সে কারণে ধর্মগ্রন্থ অবমাননার মতো ঘটনাকে বাক-স্বাধীনতা বা মুক্তবাক চর্চা হিসেবেই গণ্য করে সরকার। এ ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধও নেই।
অবশ্য, চাপের মুখে পাবলিক অর্ডার অ্যাক্ট সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছে সুইডেন। নতুন নীতিমালা অনুসারে বিক্ষোভকারীদের দমনে পুলিশি ক্ষমতা বাড়বে, সীমান্তে নজরদারিও কঠোর হবে।
জ্যাকব সানগামা বলেন, কোরআন পোড়ানো নিয়ে পুরো বিশ্বে যে উত্তেজনা ছড়িয়েছে, সেটি সমাধানের পথ খুঁজছে সুইডেন ও ডেনমার্ক। মূলত, মুসলিম দেশগুলোর বয়কট এড়ানো এবং ঘরে-বাইরে সহিংসতা বন্ধ করাই এর মূল উদ্দেশ্য। এ ছাড়া বিভিন্ন মুসলিম দেশে হামলার শিকার হচ্ছে দূতাবাসগুলো। তাই তড়িঘড়ি বিধিমালা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সুইডেন। শিগগিরই পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পোড়ানোকে অবৈধ ঘোষণা করবে দেশটি।
এ পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করে তুলেছে সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাবার বিষয়টি। রাশিয়া বা তুরস্ক দু’পক্ষই ইউরোপীয় দেশটির জোটভূক্ত হওয়ার বিরোধী। এরমধ্যে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় যথাযথ আইনি পদক্ষেপ না নিলে, সুইডেনের ন্যাটো স্বপ্নে বাধা দেয়া হবে বলে সতর্ক করেছে এরদোগান প্রশাসন।
এসজেড/
Leave a reply