দাবানলে ভস্মীভূত হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ; নিহত ৫৩, নিখোঁজ অন্তত ১ হাজার

|

দাবানলে ভস্মীভূত হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ। ভয়াবহ এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, নিখোঁজ আরও ১ হাজার মানুষ। ফায়ার ব্রিগেড, স্বেচ্ছাসেবী, স্থানীয়দের এখন পাশাপাশি উদ্ধারকাজে নেমেছে ন্যাশনাল গার্ডও। সহায়তার জন্য তহবিল বরাদ্দে এই দাবানলকে ‘বড় ধরণের দুর্যোগ পরিস্থিতি’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রাজ্যের গভর্নরের আশঙ্কা, সময়ের সাথে প্রাণহানিও বাড়তে পারে। খবর বিবিসির।

এই দাবানলে অনিন্দ্যসুন্দর হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে জনবসতি, ফসলের মাঠ আর পর্যটন এলাকা। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাউই দ্বীপ। দাবানলের কারণে ১১ হাজার বাসিন্দা এখনও বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছে। ফোনের সংযোগও নেই। সেখানকার রিসোর্ট সিটি হিসেবে পরিচিত লাহাইনা দাবানলের আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে। পুড়ে গেছে এর ৮০ ভাগ এলাকা। পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে ১৭০০ এরও বেশি ঘরবাড়ি ও স্থাপনা।

এ পরিস্থিতিতে প্রাণহানি বাড়ার আশঙ্কা জানিয়ে দ্বীপপুঞ্জের গভর্নর জশ গ্রিন বলেন, নিঃসন্দেহে এটি হৃদয়বিদারক। এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর কখনও দেখেনি হাওয়াই। ঐতিহাসিক শহর লাহাইনা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে, শহরটার ওপর শক্তিশালী বোমা ফেলা হয়েছে। প্রায় সব ঘরবাড়ি নতুনভাবে তৈরি করতে হবে। সবশেষ ১৯৬০ সালে প্রলয়ংকারী সুনামি দেখেছিল হাওয়াই। যাতে প্রাণ যায় ৬১ জনের। তবে এবারের এ দুর্যোগ আরও ভয়াবহ। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ, প্রাণহানিও বাড়তে পারে।

এদিকে, আটকা পড়াদের উদ্ধারে ব্যবহৃত হচ্ছে ১৩টি হেলিকপ্টার। তবুও খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

ভুক্তভোগী এক বাসিন্দা বলেন, জলন্ত আগুনের মাঝে বাড়ি-গাড়ি ফেলে দৌড়ে বের হই। সাথে ছিল স্ত্রী আর ৫ সন্তান। একটা নৌকায় চড়ে বসি। চোখের সামনেই আগুন সবকিছু গ্রাস করে নেয়। নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল সে সময়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমরা উদ্ধার পাই।

এ পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় সহায়তা নিশ্চিতে ‘বড় ধরনের দুর্যোগ পরিস্থিতি’ হিসেবে দাবানলকে আখ্যায়িত করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, বিধ্বংসী দাবানল অর্ধ-শতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে হাওয়াইয়ে। সেখানে ‘বড় ধরনের দুর্যোগ’ পরিস্থিতি ঘোষণা করা হলো। তাতে জরুরি ভিত্তিতে যাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, তাদের জন্য ছাড় করানো যাবে তহবিল। তাছাড়া যেসব নির্ভিক ফায়ার ব্রিগেডকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন তাদেরকেও দেয়া হবে সার্বিক সহযোগিতা।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) মার্কিন দ্বীপটিতে দাবানলের সূত্রপাত হয়। প্রশান্ত মহাসাগরীয় হারিকেন ‘ডোরা’র কারণে দ্রুত আগুন ছড়াচ্ছে বলে জানানো হয়। এখনও বেশকিছু জায়গায় সক্রিয় রয়েছে দাবানল।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply