অর্থনীতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ভারসাম্য আনতে পারে ব্রিকস!

|

ব্রিকস জোট সম্প্রসারণ ঘোষণার পর থেকেই আলোচনা চলছে জোটটির মার্কিন বিরোধী অবস্থান নিয়ে। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন-রাশিয়ার আগ্রহেই মূলত পরিধি বাড়ছে এই জোটের। তবে ইরান ছাড়া বাকি পাঁচ দেশ মূলত যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবেই পরিচিত। অর্থনীতির কথা বলা হলেও, রাজনৈতিক ভারসাম্যে কাজ করবে ব্রিকস। ফলে মস্কো-বেইজিংয়ের নেতৃত্বে বৈশ্বিক রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর গার্ডিয়ানের।

ব্রিকস জোটের সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে মূলত নতুন সদস্য নেয়ার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এমন দেশগুলোকেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল আমদানিকারক দেশ হওয়ায় সদস্য করা হয়েছে সবচেয়ে বেশি তেল রফতানি করা সৌদি আরবকে। অন্যদিকে মার্কিন বিরোধী অবস্থানের কারণেই ঠাঁই পেয়েছে ইরান। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু অর্থনীতি নয়, রাজনৈতিক বিষয়টিও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। তাই ব্রিকসে মার্কিন মিত্রদের অন্তর্ভুক্তি জল্পনার জন্ম দিয়েছে।

চীন বিষয়ক বিশ্লেষক অ্যান্ড্রু লিয়ং বলছেন, গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর ওপর দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন কর্তৃত্ব চলে আসছে। অর্থনৈতিক, আদর্শিকসহ নানা ইস্যুতেও যুক্তরাষ্ট্র এই কর্তৃত্ব চালিয়ে আসছে। সেখান থেকেও মুক্তি চায় এসব দেশ। নিজেদের সার্বভৌমত্ব ধরে রাখতে চায়। সেক্ষেত্রে চীন ব্রিকসকে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করছে চীন। তবে এটা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কোনো ধরনের লড়াইয়ের জন্য নয়। বরং ভারসাম্য আনতে পারে ব্রিকস।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, ব্রিকসের সম্প্রসারণ মূলত রাশিয়া ও চীনের জয়। কারণ তারা পশ্চিমা বিরোধী জোট হিসেবে এটিকে শক্তিশালী করতে চায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জেমস ওটস বলছেন, ভূ-রাজনৈতিকভাবে রাশিয়া এখন খুবই চাপে রয়েছে। মস্কোর এখন এমন মিত্র প্রয়োজন যারা বিপদে তার জন্য এগিয়ে আসবে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই রাশিয়া ব্রিকসের ওপর জোর দিচ্ছে। সেই কারণেই মার্কিন বলয়ের পক্ষের দেশগুলোর পাশাপাশি বিপক্ষে অবস্থান নেয়া বিভিন্ন দেশকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র এরইমধ্যে বলেছে যে, ব্রিকস সম্প্রসারণে তারা উদ্বিগ্ন নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই জোটের লক্ষ্য থাকবে মূলত অর্থনীতিই।

ব্রিকস কো অপারেশন স্টাডিজ ওয়াং লি পরিচালক বলছেন, অবাধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সবার জন্য উন্নয়ন, ব্রিকসের মূল বিষয় এগুলোই। সেই মূলমন্ত্রের বাস্তবায়ন হয়েছে জোটের পরিধি বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তার জন্য এই জোট সবচেয়ে কার্যকর। টেকসই উন্নয়নের জন্য এই জোটকেই প্রাধান্য দিচ্ছে দেশগুলো।

এবার ব্রিকস সম্মেলনে জোর দেয়া হয় অভিন্ন মুদ্রার ওপরও। বিশ্লেষকরা বলছেন ডলারের বিকল্প হিসেবে এই প্রস্তাব এখনও কল্পনাপ্রসূত।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply