একাধিক ভিন্নতা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিল ১৯৯২ ক্রিকেট বিশ্বকাপ। এক কথায় বলা যায়, অনেক নতুনের সংমিশ্রণে ছিল সেবারের আসর। রঙিন পোশাকের প্রবর্তনের পাশাপাশি ফ্লাডলাইটের নিচে গড়িয়েছিল খেলা। নতুন আঙ্গিকের এই বিশ্বকাপে মাইলফলক তৈরি করে পাকিস্তান। ফাইনালে গ্রাহাম গুচ-ইয়ান বোথামদের ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন অধিনায়ক ইমরান খান।
সূচি চূড়ান্তের পরও নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে শেষ মূহুর্তে দক্ষিণ আফ্রিকার অন্তর্ভুক্তি সেই আসরের নাটকীয়তায় যোগ করে নতুন এক অধ্যায়। আগের ফরম্যাট পরিবর্তন করে সেবারের আসর বসে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে। অস্ট্রলিয়া-নিউজিল্যান্ডের যৌথ আয়োজনে বিশ্বকাপের পঞ্চম আসরে লড়াইয়ে নামে ৯টি দল।
৯২’র বিশ্বকাপ আসরে কিছু অভূতপূর্ব অধিনায়কত্ব দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। ওপেনিংয়ে পিঞ্চ হিটার নামানোর পাশাপাশি প্রথম ওভার থেকেই স্পিন আক্রমণের বিষয়টি আবিষ্কার করেন কিউই অধিনায়ক মার্টিন ক্রো। আর প্রথম পাঁচ ম্যাচে একটিতে জয় পাওয়া পাকিস্তান শেষপর্যন্ত ঘুরে দাঁড়ায় ইমরান খানের জাদুকরি নেতৃত্বে।
আধুনিক বিশ্বকাপের এই আসরে কপাল পোড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রথম আসরে আলো ছড়ালেও বৃষ্টির কারণে ফাইনালে যাওয়ার আশা শেষ হয়ে যায় কেপলার ওয়েসেলস বাহিনীর। অবশ্য তরতর করেই গ্রুপপর্বের বাধা পেরোয় প্রোটিয়ারা। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের দেয়া ২৫২ রান ভালোভাবেই তাড়া করছিল ওয়েসেলস-পিটার কারস্টেনরা। ১৩ বলে যখন দরকার ২২ রান, তখন আবারও বৃষ্টি নামলে প্রোটিয়াদের নতুন টার্গেট দাঁড়ায় ১ বলে ২২। হতাশ দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ৩য় বারের মতো ফাইনালে যাওয়ার আনন্দে মাতে ইংল্যান্ড।
আরেক সেমিফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হারের জন্য এখনো মার্টিন ক্রোর ইনজুরিকেই দায়ী করে কিউইরা। যে কারণে মাঠে তার অধিনায়কত্ব মিস করে দলটি। এই সুযোগে ২৬৩ রানের লক্ষ্যের ম্যাচটি ছিনিয়ে নেন ৩৭ বলে ৬০ করা ইনজামাম-উল-হক।
মেলবোর্নে ফাইনালে ইংলিশদের বিপক্ষে জয়ের নায়ক অবশ্য ইমরান খান। তার ৭২ রানে ভর করে ২৪৯ তোলে পাকিস্তান। ওয়াসিম আকরাম, মুশতাক আহমেদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২২৭ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। ১১৪ গড়ে ৪৫৬ রান করে বিরানব্বই বিশ্বকাপের সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতেন মার্টিন ক্রো। আর বোলিংয়ে সর্বোচ্চ ১৮ উইকেট নেন ওয়াসিম আকরাম।
/এএম
Leave a reply