দেশজুড়ে ব্যাপক কুর্দি নির্মূল অভিযান চালাচ্ছে তুরস্ক। বুধবার (৪ অক্টোবর) পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশিতে ধরপাকড়ের শিকার হয়েছেন হাজারেরও বেশি মানুষ। যাদের মধ্যে রয়েছেন রাজনৈতিক সশস্ত্র সংগঠন পিকেকে এর শীর্ষ ৩০ সদস্য। কুর্দিবিরোধী অপারেশনে পশ্চিমা মিত্রদের সমর্থন চেয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। অবশ্য বিনা অনুমতিতে ইরাকে বোমা হামলা চালানোয় ক্ষুব্ধ সেদেশের প্রেসিডেন্ট। খবর বিবিসির।
গত কয়েকদিন ধরেই ইস্তাম্বুলসহ ১৮টি প্রদেশে চিরুনি অভিযান চালাচ্ছে তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনী। তাতে অংশ নিয়েছেন সাড়ে ১৩ হাজার সদস্য। তাদের উদ্দেশ্য একটাই, কুর্দি গেরিলা দল পিকেকে এর বিনাশ। গত দু’দিনের অভিযানে ধরপাকড়ের শিকার হাজারের বেশি মানুষের বিরুদ্ধে গেরিলাদের গোপনে অস্ত্র-অর্থ সহযোগিতা দেয়ার অভিযোগ এনেছে তুর্কি সরকার।
এনিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেন, আঙ্কারার স্পর্শকাতর এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের পর কুর্দি বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে সরকার। আমাদের প্রত্যাশা, মিত্র দেশগুলো এ ইস্যুতে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। নিন্দা-সমালোচনার পাশাপাশি উপযুক্ত আচরণ দেখতে চায় তুরস্ক। শুধু উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মাধ্যমে আমাদের ক্ষত সারবে না।
এদিকে, ইরাকের উত্তরাঞ্চলে তুর্কি বিমান অভিযান বহাল রয়েছে। যাতে, চরম ক্ষুব্ধ সেদেশের সরকার। প্রেসিডেন্টের আহ্বান, সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন না করে জঙ্গিবাদ দমনে সমঝোতায় আসা উচিত তুরস্কের।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ইরাকের প্রেসিডেন্ট আবদুল লতিফ রশিদ বলেন, বিনা অনুমতিতে ইরাকি ভূখণ্ডে তুরস্কের বিমান অভিযান নিন্দনীয়। এরদোগান প্রশাসন বলছে, এটি কুর্দি বিরোধী অপারেশন। কিন্তু তারা উত্তরাঞ্চলের বেসামরিক ইরাকিদের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয়। বোমা হামলায় তারা প্রাণ হারাতে পারেন। এরদোগান সরকারের প্রতি আহ্বান, ইরাকের সাথে একটি নিরাপত্তা চুক্তিতে আসুন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এতোদিন টানাপোড়েন চলছিল। জোরালো বিস্ফোরণের পর তৃণমূল থেকে পিকেকে দলটিকে উৎখাতের মোক্ষম সুযোগ পেলো আঙ্কারা।
মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক স্টিভেন এ কুক বলেন, ১৯৮৪ সাল থেকেই তুর্কি-কুর্দি এই বিরোধ। এবার ক্ষমতা দখলের জন্য মরিয়া কাণ্ড ঘটিয়ে বসলো পিকেকে। এতোদিন ছোটখাটো ধরপাকড় চালালেও এবার পাকাপোক্ত অভিযান চালানোর অজুহাত পেয়েছে সরকার। এ কারণেই গেরিলা দলটিকে তৃণমূল থেকে উৎখাতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছে।
রোববার সকালে পার্লামেন্ট এলাকায় স্পর্শকাতর বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এক আততায়ী। এতে আহত হন ২ নিরাপত্তারক্ষী। পাল্টা অভিযানে মৃত্যু হয় অপর আততায়ীর। পরে হামলার দায় স্বীকার করে নেয় পিকেকে।
এসজেড/
Leave a reply