কে এই আদম তমিজি হক?

|

সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে এখন বেশ পরিচিত নাম আদম তমিজি হক। একাধিকবার লাইভ ভিডিওতে এসে নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ঘটান তিনি। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। মামলায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগও আনা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) তাকে গ্রেফতারও করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তবে কেন আদম তমিজিকে নিয়ে এত আলোচনা?

পেশায় আদম তমিজি একজন ব্যবসায়ী। শিল্পগোষ্ঠী হক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। তার বাবা ব্যারেস্টার তমিজি হক ছিলেন হক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা।

১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশের বিস্কিট ও ব্যাটারি শিল্পে শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে হক গ্রুপের। বাবার মৃত্যুর পর হক গ্রুপের নেতৃত্বে আসেন আদম তমিজি হক। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের দায়িত্ব বুঝে নেন তিনি।

তবে নিজ পরিবারের সাথে খুব একটা ভালো সম্পর্ক নেই আদমের। নিজের প্রভাব খাটিয়ে বাবার সমস্ত সম্পত্তি একাই আত্মসাৎ করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তার বোন।

১৯৭৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঢাকার ইস্কাটনে জন্ম আদম তমিজির। পরিবারের ইচ্ছায় বিদেশে পড়তে যান তিনি। পড়া শেষে দেশে ফিরে পারিবারিক ব্যবসায় মন দেন আদম। তার নিজস্ব ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, আদমের পরিকল্পনা এবং জনমুখী কাজের কারণে হক গ্রুপের প্রসার হয়েছে অনেক গুণ।

২০১৭ সালে মানবিক বাংলাদেশ নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কিছু জনকল্যাণমূলক কাজ করেন আদম তমিজি। এর মাধ্যমেই দেশের রাজনৈতিক চত্বরে প্রবেশ তার। ওই বছরের নভেম্বরেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পর বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। আদম তমিজি হকও ছিলেন তাদের মধ্যে একজন।

রাজনীতিতে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি একাধিক গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানান, রাজনীতি নিয়ে তার পড়াশোনা আছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই চত্বরে প্রবেশ করার ইচ্ছা ছিল তার। এমনকি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি আওয়ামী লীগের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত বলেও দাবি করেন এই ব্যবসায়ী। তার বাবা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ।

তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন বিতর্কিত কমকাণ্ড করে আলোচনায় আসেন আদম তমিজি। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলাও দায়ের করা হয়। গত ১৬ নভেম্বর আদম তমিজির বাড়িতে অভিযান চালায় র‍্যাব। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। মামলায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে নিজের পাসপোর্ট পুড়িয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন আদম। ওই ঘটনার পর ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে আদম তামিজী হককে অব্যাহতি দেয়া হয়। সবশেষ আজ শনিবার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply