‘সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি ও তদন্ত’ ঘিরে ভারতের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে মোদি-মমতা দ্বৈরথ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার রাতে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে অভিযান চালায় সিবিআই। পাল্টা ব্যবস্থা নেয় রাজ্য পুলিশও; আটক করে সংস্থার কর্মকর্তাদের।
এই অভিযানের প্রতিবাদে অনির্দ্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান ধর্মঘটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। অভিযোগ, বিরোধী মতকে দমনে সিবিআই তদন্তের নাটক সাজিয়েছে মোদি সরকার।
মমতা ব্যানার্জি অবস্থান ধর্মঘটে বসতেই স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে ধর্মতলা। রাত যত গভীর হয় বাড়তে থাকে ভিড়। রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিবাদের ঘোষণা দেন মমতা ব্যানার্জি। সকালেই জনসমুদ্রে পরিণত হয় বিক্ষোভস্থল।
পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেন্দ্র যে সাজানো নাটক করছে এটাতো পরিষ্কার। তাদের মূল টার্গেট হলো আমাদের মনোবলকে নাড়িয়ে দেয়া। কার এখতিয়ার নিয়ে সিবিআই এই অভিযান চালালো তার জবাব দিতে হবে নরেন্দ্র মোদিকে। এই অনাচারের শেষ দেখে ছাড়বো আমরা। সিবিআই লেলিয়ে দেয়ার দু:সাহস কিভাবে পায় কেন্দ্র?’
চিটফান্ড তদন্তে জড়িত থাকার অভিযোগে রোববার রাতে কোলকাতা পুলিশ কমিশনারের বাসভবনে অভিযান চালাতে যায় ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। পাল্টা ব্যবস্থা নেয় কোলকাতা পুলিশও। আটক করে সিবিআইর যুগ্ম-পরিচালক পঙ্কজ শ্রিবাস্তবসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের। এরপরই তোলপাড় শুরু হয় কেন্দ্রীয় প্রশাসনে।
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সিতারমন বলেন, মমতা ব্যানার্জি যা করছেন এটা স্পষ্ট সংবিধানের লঙ্ঘন। সিবিআই কর্মকর্তাকে আটক করেছেন। প্রশাসনিক কাজে বাধা দেয়ার অধিকার তার নেই। এটা উগ্রবাদী আচরণ।
গত ১৯ জানুয়ারি ভারতের সব বিরোধী দলগুলোর সমন্বয়ে বিজেপি বিরোধী সমাবেশ হয় পশ্চিমবঙ্গে। গঠন করা হয় মহাজোট। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, নির্বাচনের আগে বিরোধীদের কোনঠাসা করতেই দুর্নীতি তদন্তের নাটক সাজিয়েছে মোদি প্রশাসন।
তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ডেরেক ও’ ব্রায়ান বলেন, ১৯ তারিখের ব্রিগেডে ভীত কেঁপে গেছে নরেন্দ্র মোদির। উনি বুঝতে পেরেছেন পালবার পথ আর নেই। তাই এখন প্রশাসনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। জনগণই এর জবাব দেবে।
এদিকে, চিটফান্ড ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছে কোলকাতা পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও তদন্তের ব্যপারে অ-সহযোগিতা করেছেন রাজিব কুমার। আগামীকাল এর শুনানি।
২০১৩ সালে আমানতদারদের কাছ থেকে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার তহবিল তশরুফের অভিযোগ আনা হয় অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান ‘সারদা’র বিরুদ্ধে। ওই ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া সিবিআইকে।
Leave a reply