আলেকজেন্ডার গ্রাহাম বেলের নাম শুনলেই কম বেশি সকলেই হয়তো আমরা টেলিফোনের কথা চিন্তা করি। যোগাযোগের এক যুগান্তকারী এক আবিষ্কারের নাম টেলিফোন; কিন্তু, টেলিফোন বাদে আলেকজেন্ডার গ্রাহাম বেলের আর কোনো আবিষ্কার সম্পর্কে কি আমরা তেমনটা জানি?
আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল ১৮৪৭ সালের তেশরা মার্চ স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে জন্মগ্রহন করেন এডিনবার্গের ১৬ চারলোটি স্ট্রিটের একটি বাড়িতে একটি পাথরের খোদাই থেকে জানা যায় যে এটিই তার পরিবারের আবাসস্থল এবং তার জন্মস্থান ছিল। ২ আগস্ট ১৯২২ তারিখে বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল তার নিজের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।
গ্রাহাম বেলের মৃত্যুতে তার প্রতি সম্মান জানাতে আমেরিকাতে পুরো ১ মিনিট অনবরত টেলিফোন রিং বাজানো হয়।
আলেকজেন্ডার গ্রাহাম বেলের মতে তার জীবনের শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবন হলো “ফটোফোন”, এমনকি তিনি ফটোফোনের আবিষ্কারকে টেলিফোন আবিষ্কার থেকেও শ্রেষ্ঠ মনে করতেন।
টেলিফোনের উদ্ভাবক গ্রাহাম বেল তার সহকারী চার্লসের সামার টেইন্টারের সাথে ১৮৮০ সালে এই ফটোফোনের পেটেন্ট করেছিলেন যার মাধ্যমে আলো ব্যবহার করে শব্দ প্রেরণ করবে। বেল এটিকে ‘ফটোফোন ট্রান্সমিটার’ (Photophone transmitter) হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
ফটোফোন অনেকটা সাধারণ টেলিফোনের মতো কাজ করলেও পার্থক্য হলো ফটোফোন বার্তা প্ররণ করে আলোর মাধ্যমে তারহীন প্রযুক্তিতে আর টেলিফোন বার্তা প্রেরণ করে বিদ্যুৎ তরঙ্গ হিসেবে তারের মাধ্যমে।
কিন্তু বেলের এতো সাধের আবিষ্কারটি ব্যবহারে মুখোমুখি হতে হয় নানা সমস্যার। বাতাসে শব্দ তরঙ্গ বাতাসে সঠিকভাবে প্রবাহিত হতে পারতোনা বলে ফটোফোন নিয়ে পুরোপুরি সফল হতে পারেননি গ্রাহাম বেল।
বর্তমানে আমরা যে বহুল প্রচলিত ফাইবার অপটিক কমিউনিকেশন প্রযুক্তির ব্যবহার দেখি তার উৎপত্তি কিন্তু গ্রাহাম বেলের ফটোফোন থেকেই। প্রতিনিয়ত আমরা অপটিকাল ফাইবারের যে সুবিধা ভোগ করছি, তা হয়তো সম্ভব হতোনা যদি ১৮৮০ সালে আলেকজেন্ডার গ্রাহাম বেল তারহীন ভাবে আলোকে বার্তা বাহক হিসাবে ব্যবহারের ধারণা না দিতেন।
আলোর সাহায্যে বার্তা প্রেরণ সফল হওয়ার পর গ্রাহাম বেল এতটাই খুশি হয়ে যান যে ফটোফোনের নামানুসারে তার নামও রাখতে চান। যদিও তার স্ত্রী বাধা দেয়াতে তা আর হয়ে উঠেনি। পরবর্তীতে তার মেয়ের নাম রাখা হয় ‘মাবেল’।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
(লিখেছেন: তাহসান আব্দুল্লাহ)
Leave a reply